স্বামীরা হলেন সংসদ সদস্য, জামানত হারাচ্ছেন স্ত্রীরা

চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন ও মাহমুদা বেগম।ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের দুটি আসনে কাগজে-কলমে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল দুই দম্পতি। দুটি আসনেই স্বামীরা জয়ের দেখা পেলেও জামানত হারাচ্ছেন স্ত্রীরা। জামানত হারাতে বসা এই দুই সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেন—লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুরা) আসনে চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন ও লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনে মাহমুদা বেগম।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে মোট ১২ জন প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ১ লাখ ৩০ হাজার ২১১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের সেলিনা ইসলাম পেয়েছেন ৯ হাজার ২৮ ভোট। এই আসনে নুরউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩৪৫ ভোট পেয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে ৪৬ হাজার ৩৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। আবদুল্লাহর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ ইনু) সহসভাপতি মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮১০ ভোট। মো. আবদুল্লাহর স্ত্রী মাহমুদা বেগম এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুটি আসনেই এ দুই নারী প্রার্থী কোনো প্রচার-প্রচারণায় ছিলেন না। কেবল স্বামীদের নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে তাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন। তবুও চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন ৩৪৫ ভোট ও মাহমুদা বেগম ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। পরাজিত হলেও স্বামীর বিজয়ে খুশি এই দুই প্রার্থী। নির্বাচনের ফলাফলের পর তাঁরা কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা পাচ্ছেন। তাঁদের মিষ্টিমুখ করানো হচ্ছে বাড়িতে। তবে এ দুই নারী প্রার্থীই নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী জামানত হারিয়েছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, বিধি অনুযায়ী কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। যাঁরা কম ভোট পেয়েছেন, তাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত।

জানতে চাইলে চৌধুরী রুবিনা ইয়াছমিন বলেন, নির্বাচনী মাঠের পরিস্থিতির কারণে স্বামীর সহায়ক হিসেবে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। এ কারণে তিনি কোনো প্রচার-প্রচারণা চালাননি। মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আমি পরাজিত হয়েছি। কিন্তু এটির মধ্যে বড় প্রাপ্তি রয়েছে। জামানত হারালেও এতে আমি খুশি।’