ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই: জাজিরা ছাত্রলীগের সভাপতি

নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারী। গত রোববার বিকেলে উপজেলার টিঅ্যান্ডটি মোড় এলাকায়ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারী প্রতিপক্ষ প্রার্থীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘আজকে তিনি প্রার্থী হয়ে ইদ্রিস ফরাজির বিরুদ্ধে নানান জায়গায়, নানান বক্তৃতায় হুমকি দিচ্ছেন। আপনার এই হুমকি কোনো কাজে আসবে না। ...কোনো সন্ত্রাসী কোনো কাজে আসবে না। ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই।’

দ্বিতীয় ধাপে জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে গত রোববার বিকেলে উপজেলার টিঅ্যান্ডটি মোড় এলাকায় আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজি মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীর নির্বাচনী সভায় তিনি ওই বক্তব্য দেন।

ছাত্রলীগ নেতা রুবেল ব্যাপারী ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছিলেন। পরে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে আজ তিনি ভিডিওটি মুছে ফেলেন। জাজিরায় চেয়ারম্যান পদে ইদ্রিস ফরাজী ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আমিনুল ইসলাম (রতন), নান্নু মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ সামচুল হক খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২১ মে জাজিরায় ভোট গ্রহণ করা হবে।

ছড়িয়ে পড়া ৪ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওতে রুবেল ব্যাপারীকে বলতে শোনা যায়, ‘আজকে ইদ্রিস ফরাজীর বিরুদ্ধে যিনি (আমিনুল ইসলাম রতন) প্রার্থী হয়েছেন, তিনি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। নৌকা প্রতীকের পক্ষে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের হত্যা করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মার্ডার (হত্যা) মামলা হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন, আজকে তিনি প্রার্থী হয়ে এই ইদ্রিস ফরাজির বিরুদ্ধে নানান জায়গায়, নানান বক্তৃতায় হুমকি দিচ্ছেন। আসলে সাধারণ মানুষ ইদ্রিস ফরাজীর পক্ষে রয়েছেন। আমরাও ইদ্রিস ফরাজীর পক্ষে রয়েছি। আপনার এই হুমকি কোনো কাজে আসবে না।’

রুবেল ব্যাপারী
ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আগামী ২১ তারিখের নির্বাচন, একটি সুষ্ঠু সুন্দর ও গঠনমূলক নির্বাচন হবে। মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমরা এই ইদ্রিস ফরাজীকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়ে ঘরে ফিরব। এর আগে আমরা কেউ ঘরে ফিরব না।...কোনো সন্ত্রাসী কোনো কাজে আসবে না। ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই। এই নির্বাচনে ইদ্রিস ফরাজীর হোন্ডা মার্কায় ভোট দিয়ে আমরা স্মার্ট জাজিরা গড়ে তুলব।’

ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা রুবেল ব্যাপারী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেদ উজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিওর ব্যাপারে কিছুই জানি না। শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি ছাত্রলীগের মূলনীতি। ছাত্রলীগের সম্মানহানি করার অধিকার কারও নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব। রুবেল কোনো অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে থাকলে সাংগঠনিকভাবে তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’

মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রুবেল আমার স্নেহাস্পদ। আমার নির্বাচনে কাজ করছেন। নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে কী মন্তব্য করেছেন, তা আমি জানি না।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় কেউ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন দাবি করেছেন বা কোনো হুমকিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন এমন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।