কয়রায় চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক এমপি ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
খুলনার কয়রায় জামায়াত নেতার কাছে চাঁদা আদায় ও মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আক্তারুজ্জামান বাবু ও তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলার আবেদন করেন নূরুল ইসলাম।
নূরুল ইসলাম উপজেলার সরিষামুট গ্রামের বাসিন্দা ও বাগালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি। মামলার আবেদনের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আজহারুল ইসলাম তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি খুলনা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, বাগালী ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ গাজী, একই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুস সাত্তার পাড়, কয়রা থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সালাউদ্দিন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুজ্জামান এবং নাসির উদ্দিন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ও তাঁদের অনুগত পুলিশ সদস্য। মামলার বাদী নূরুল ইসলাম জামায়াতের একজন সক্রিয় সদস্য হওয়ায় আসামিরা প্রায়ই তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করতেন এবং হুমকি দিতেন। মামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যেরা সাবেক সাংসদ আক্তারুজ্জামান ও আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে নাশকতার মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে ও বন্দুকযুদ্ধে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে চাঁদা আদায় করেছেন। বাদীসহ আরও ১৬ জন ব্যক্তি একটি মামলায় খুলনা জেলা আদালতে হাজিরার জন্য যাওয়ার পথে আসামিরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় শতাধিক ব্যক্তি তাঁদের গতিরোধ করে মারধর করে অর্থ ও মালামাল ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাঁরা বাদীর কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরবর্তী সময়ে আসামিদের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় বাদীর বসতঘরে প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অর্থ লুটপাট করে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন আসামিরা। পুলিশ মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছে। বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়সহ ঘরবাড়ি লুটপাট করেছে। এখন ন্যায়বিচারের আশায় মামলাটি করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবুসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে আছেন।