বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৩

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১২ জন আহত হন। আজ শনিবার বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা আহত ব্যক্তিরা
ছবি: প্রথম আলো

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুনবহা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মঞ্জুর হোসেনের সঙ্গে একই ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বাকিয়ার মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঈদুল আজহার আগে মঞ্জুর হোসেনের মেয়ের বিয়ের দাওয়াত না দেওয়ায় কেন্দ্র করে একই পক্ষের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহেব আলীর সঙ্গে মঞ্জুর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের একপর্যায়ে মঞ্জুর হোসেন তাঁর প্রতিপক্ষ বাকিয়ার মোল্লার সঙ্গে মিলে যান। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মঞ্জু ও বাকিয়ার তাঁদের অনুসারীদের নিয়ে হরিহরনগর বাজারে চা পান করতে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাহেব আলী তাঁর লোকজন নিয়ে মঞ্জুর অনুসারী সরোয়ারকে (৬০) কুপিয়ে আহত করেন।

এ ঘটনার জেরে শনিবার সকালে প্রতিপক্ষের হামলায় সাহেব আলী আহত হন। পরে পাশেরবরাট গ্রামে এবং উথলি গ্রামের একদল লোক সাহেব আলীর অনুসারীদের সঙ্গে যোগ দেন। এরপর তাঁরা মঞ্জুর ও বাকিয়ারের নেতৃত্বে তাঁদের অনুসারীদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে বোয়ালমারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ সংঘর্ষে মঞ্জুর হোসেন (৫২) ও তাঁর পক্ষের আনোয়ার (৫০), ওবায়দুল (৪৫), ইমরুল (৩৫), মিঠুন মোল্লা (৪৮) এবং সাহেব আলীর পক্ষের সাতজন আহত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মঞ্জুল হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাহেব আলীর পক্ষের আহত ব্যক্তিরা পাশের মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সাহেব আলী মুঠোফোনে বলেন, তাঁর অবস্থা ভালো না। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের জখম আছে। মহম্মদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তিনি মাগুরায় অবস্থান করছেন। তিনি আরও বলেন, আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। শনিবার সকালে তিনি রাস্তায় বের হলে মঞ্জু ও বাকিয়ারের লোকজন ঢাল–সড়কি নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান।

এ বিষয়ে মঞ্জুর পক্ষের জিয়াউর রহমান বলেন, মঞ্জুর মেয়ের বিয়েতে দাওয়াত না দেওয়ায় সাহেব আলী ও তাঁর লোকজন ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এর জেরে শনিবার সকালে তাঁরা দল বেঁধে এসে অতর্কিত তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে মঞ্জুর গুরুতর জখম হন।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল ওহাব বলেন, সাহেব আলী ও মঞ্জুর হোসেনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। এর জেরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

ওসি আরও বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। উভয় পক্ষের যাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের আটকের চেষ্টা চলছে।