‘যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ইচ্ছুক না হন তাহলে আর কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নাই’

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দিচ্ছেন। গত রোববার
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রউফ আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করেছেন।

গত রোববার রাতে ফতেপুর উত্তর পাড়া মসজিদ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

আবদুর রউফ ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ৬ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুর রউফ বলছেন, ‘বিএনপি কিন্তু নির্বাচনে আসে নাই। খালি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসছে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ। আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়াইছে। অসুস্থ মানুষ। হঠাৎ কইরা উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করব, বিএনপির ভাইয়েরা যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিতে ইচ্ছুক না হন তাহলে আর কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নাই। তার কারণ, আমরা আওয়ামী লীগের দুইটা প্রার্থী। আমরাই ভোট দিয়ে যাকে মনোনীত করি সে আমাদের এমপি হবেন। ঠিক কি না?’

বক্তৃতায় এই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে প্রতীক দিয়েছেন, উনি যদি এমপি হয়, তাহলে আমি এই গ্রামে অনেক কাজ করতে পারব।’ এ সময় তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর উন্নয়নকাজের চিত্রও তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আজ বুধবার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।  

ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, আগে আবদুর রউফ বিএনপি করতেন। তিনি ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৭ সালের ইউপি নির্বাচনে ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপির মনোনয়ন চান। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই বছর ২০ আগস্ট আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ২০২২ সালের ১৫ জুন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ফতেপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমীর হোসেন বলেন, আবদুর রউফের বক্তব্য ইউনিয়নবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তাঁর কোনো কার্যক্রমই সঠিক নয়।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, যেখানে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ নানা ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেখানে রউফ চেয়ারম্যান ভোটারদের কেন্দ্রে না আসার জন্য বলছেন। তাঁর বক্তব্যের দায়ভার শুধু তাঁর।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।