বাসায় ঢুকে বিচারককে হুমকি ও চুরির মামলায় ৭ দিনেও অগ্রগতি নেই

গ্রিল কেটে বিচারকের বাসায় ঢুকে হুমকি ও চুরির ঘটনার পর বাসার সামনে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জয়পুরহাট শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায়প্রথম আলো ফাইল ছবি

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীনের ভাড়া বাসার গ্রিল কেটে ভেতর ঢুকে তাঁকে হুমকি দেওয়া এবং স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরির অভিযোগে করা মামলায় সাত দিনেও কোনো অগ্রগতি নেই। দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে পুলিশ উল্লেখযোগ্য তথ্য পায়নি।

৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে জয়পুরহাট শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীনের ভাড়া বাসার গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতকারীরা বিচারককে হুমকি দেন। এ ঘটনায় পরের দিন বিচারক বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহারে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন অভিযোগ করেন, ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর শয়নকক্ষের দরজার লক কেউ খোলার চেষ্টা করছিলেন, এমন শব্দে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। এ সময় তাঁরা চিৎকার শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী বাসার কাছে থাকা পুলিশের কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে মুঠোফোনে ঘটনাটি জানান। তিনি নিজে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মুঠোফোনে ঘটনাটি জানান। এর মধ্যে দুষ্কৃতকারীরা দরজার লক খুলে ঘরের ভেতরে ঢোকেন। একজন লম্বা ছোরা দেখিয়ে বিচারককে হুমকি দেন। তখন পুলিশের কনস্টেবল আরিফুল বাসার বাইরে এসে বলেন, ‘স্যার, আমি আরিফ। পুলিশ। আপনার কী হয়েছে?’ এ কথা শোনার পর দুষ্কৃতকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, তাঁর বাসা থেকে প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৫০ হাজার টাকা চুরি গেছে। গত ৩১ জানুয়ারি তিনি এক মামলায় ১১ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আসামিদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, অস্ত্রসহ একাধিক মামলা আছে। তিনি ধারণা করছেন, ওই মামলার পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা নিজেরা অথবা তাঁদের পক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

জয়পুরহাট সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শফিউল আলম মামলাটি তদন্ত করছেন। পুলিশের গোয়েন্দা শাখাও অপরাধীদের চিহ্নিত ও রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জয়পুরহাট সদরের হারাইল এলাকার বাসিন্দা সাগর হোসেন (৩০) এবং শুকতাহার গ্রামের সুমন চক্রবর্তীকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তবে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার হয়নি।

জয়পুরহাট থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিচারককে হুমকি ও চুরির ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে। দ্রুত রহস্য উদ্‌ঘাটিত হবে বলে তিনি আশা করছেন।