নির্বাচন ঘিরে আবারও নওগাঁয় সহিংসতার ঘটনা ঘটল। এবার নওগাঁ-৫ (নওগাঁ সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ ওরফে শিষাণের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। ছেকার আহমেদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন।
হামলায় আহত রেজাউল ইসলাম (৬০) নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পারনওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। তিনি নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী ও সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছেকার আহমেদের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে শহরের বটতলী মোড় এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল ইসলামের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা কুপিয়ে গুরুতর জখম করলে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গতকাল রাতে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ফজলুল হক বলেন, গতকাল রাত সাড়ে আটটার গুরুতর জখম অবস্থায় রেজাউল ইসলামকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর ডান পায়ে হাঁটুর একটু ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর গভীর ক্ষত ছিল। এ ছাড়া তাঁর ডান হাতের কবজির নিচে এবং মাঝখানের আঙুলের ওপরে কোপ দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর হাতের রগ কেটে গিয়েছে। এ ছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক আজ রোববার সকালে বলেন, হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ বলেন, নৌকার প্রার্থীর অনুসারীরা রেজাউল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে। নৌকা প্রার্থীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা প্রতিনিয়ত তাঁর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
নওগাঁ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল (জন)। অভিযোগের বিষয়ে নিজাম উদ্দিনের অনুসারী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক বলেন, ‘যে কেউ অভিযোগ করলে করতেই পারেন। তবে তার সত্যতা কতটুকু, সেটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তদন্ত ছাড়াই কারও ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়া দায়িত্বহীনতার পরিচয়। তবে এ ধরনের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। পুলিশ নিশ্চয়ই ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’
আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ নিয়ে নওগাঁয় ছয়টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটল। এ ছাড়া বিভিন্ন সংসদীয় এলাকায় নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অন্তত ১২টি ঘটনা ঘটেছে।