সংসদ সদস্য ও চেয়ারম্যান দ্বন্দ্বে অসন্তোষ আ.লীগে

উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিলঘুষি মারা ও সম্মেলন স্থগিত হওয়া নিয়ে সংকট নিরসনে ২১ জুলাই ধানমন্ডির ৩ নম্বরে সভা আহ্বান করা হয়েছে।

কুমিল্লা জেলার মানচিত্র

সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের দ্বন্দ্বে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরা বলছেন, একজন আইন প্রণেতা হয়ে সংসদ সদস্য কোনোভাবেই স্থানীয় সরকারের একজন জনপ্রতিনিধিকে কিলঘুষি মারতে পারেন না। তাঁরা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে এ ঘটনার বিচার করার দাবি জানান। একই সঙ্গে দ্রুত সম্মেলন করার দাবিও করেন।

গতকাল সোমবার দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন অসন্তোষের কথাই জানা গেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা–কর্মীদের ভাষ্য, সম্মেলন ভন্ডুল করতেই পরিকল্পিতভাবে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কিলঘুষি মারা হয়। গতকাল বিকেলে উপজেলার জাফরগঞ্জ, কালিকাপুর, ভারেলা, দেবীদ্বার নিউমার্কেট, ভানী, বাগুর ও দেবীদ্বার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা–কমীদের সঙ্গে কথা হয়।

সর্বত্রই আলোচনা সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঘিরে। তাঁরা দুই নেতার দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গত শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ঘটনায় বিব্রত তাঁরা। তাঁরা সংসদ সদস্যদের উপজেলা চেয়ারম্যানের গায়ে হাত তোলাকে কোনভাবেই সমর্থন করছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেবীদ্বার পৌরসভার অন্তত তিনজন ব্যবসায়ী বলেন, সারা দেশে দেবীদ্বারের মুখ ছোট হয়ে গেছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, সভায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হবে। কিন্তু গায়ে হাত তোলা কোন ভদ্রলোকের কাজ নয় বলে জানান।

ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন,‘এমপি সাহেবের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। হাইব্রিড আওয়ামী লীগধারীদের কারণে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা আজ কোণঠাসা। এতে দেবীদ্বারে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘দুজনের (এমপি- উপজেলা চেয়ারম্যান) দ্বন্দ্বে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সংসদ সদস্যের শাস্তি দাবি করে সমাবেশ: উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিলঘুষি মারার প্রতিবাদে গতকাল বিকেল চারটায় গৌরিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ হয়। এতে রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের শাস্তি দাবি করা হয়।

সংকট নিরসনে সভা: উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিলঘুষি মারা ও সম্মেলন স্থগিত হওয়া নিয়ে বিরাজমান সংকট নিরসনে ২১ জুলাই ধানমন্ডির ৩ নম্বরে সভা আহ্বান করা হয়েছে।