কুড়িগ্রামে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে, পানিবন্দী দুই শতাধিক পরিবার
কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদের পানি বেড়েছে। এসব নদ-নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিম্নভূমির অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুধকুমার নদীর পানি নাগেশ্বরী উপজেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার আট সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর পানি বাড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন নদ-নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদের অববাহিকার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ফান্দেরচর, বন্ধুবাজার, টাপুরচর ও কালীগঞ্জ ইউনিয়নের ঢেপঢেপি, নামাপাড়া, কৃষ্ণপুর এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৮ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার ও তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের ঢেপঢেপি নামারাপাড়ার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে দুধকুমার নদের পানি বাড়তে শুরু করছে। রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত পানি বাড়তে বাড়তে উঠানে চলে এসেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে ঘরে পানি উঠতে দুই দিন লাগবে না। ঘরে পানি উঠলে ছোট ছেলেমেয়ে ও গরু-ছাগল নিয়ে খুব বিপদে পড়তে হবে।
বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বুধবার রাত থেকে উজানের ঢলে দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ইউনিয়নের নদী পাড়ের কয়েকটি চর প্লাবিত হয়েছে। ফান্দেরচর, টাপুরচরসহ আশপাশের চরাঞ্চলের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ আছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্বস্ত করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহমেদ সাদাদ বলেন, দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন, রায়গঞ্জ ইউনিয়ন ও নাগেশ্বরী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। পানিবন্দী মানুষদের খোঁজখবর নিতে সরেজমিনে রায়গঞ্জ উপজেলার ফান্দেরচরে আছেন। এখান থেকে ফিরে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হবে।