একটি দীর্ঘমেয়াদি জুডিশিয়াল প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে: প্রধান বিচারপতি

ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান বিচারপতি। আজ ময়মনসিংহ টাউন হলে
ছবি: প্রথম আলো

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘আমাদের বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে এবং সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে একটি দীর্ঘমেয়াদি জুডিশিয়াল প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের বিচার বিভাগ ও বার কাউন্সিলের অনেকবার আলোচনা সভা ও বৈঠক হয়েছে এবং বিচারিক স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও আমরা বসব। অতীতের মতো নিয়মিত তদারকির মধ্য দিয়ে আমরা ধাপে ধাপে সব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠব বলে আমার বিশ্বাস।’

আরও পড়ুন

আজ শনিবার ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এ কথা বলেন। ময়মনসিংহ টাউন হলের অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। তিনি এ সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সুশাসনের ধারণাটি সম্পৃক্ত। মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের মূল উপাদান হলো স্বাধীন ও কার্যকর বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করা। আমার প্রত্যাশা থাকবে, মানুষ হিসেবে ও আইনজীবী হিসেবে আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সৎ থাকবেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতকে সহায়তা করুন। মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। বিচারকদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রভাব এড়িয়ে চলুন। আইনের বিধিবিধান ও বিচারকার্যের রায়ের প্রতি সম্মান রাখুন।’ বিচারকদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব সময় সহায়তামূলক মনোভাব ও সাহায্যের মানসিকতা রাখতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন

তরুণ আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হতে হলে লেখাপড়া ও গবেষণার বিকল্প নেই। আপনারা অনেক মেধাবী। মেধাকে কাজে লাগিয়ে এবং পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে সামনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।’

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর বক্তব্যে ময়মনসিংহের শিল্প-সংস্কৃতি ও স্বাধীনতাযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস ও বীরত্ব গাথার স্মৃতিচারণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ধার্মিক মানুষ, কিন্তু অসাম্প্রদায়িক। ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষও অসাম্প্রদায়িক। এ অঞ্চলের সাহিত্য পৃথিবীজুড়ে সমাদৃত। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছে এ জনপদের মানুষ। তাই তো বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনে স্বাধীনতার আগে ও পরে ৪৭ বার এ জনপদে এসেছেন। এ জনপদের অসাম্প্রদায়িকতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে আমি আশা করি।’ ময়মনসিংহ অঞ্চলের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা ও গবেষণার কাজে যুক্ত থাকার জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন

ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা জজ মমতাজ বেগম, সাবেক সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন, ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. জহিরুল হক, এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, কফিল উদ্দিন ভূঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ। সংবর্ধনার আগে প্রধান বিচারপতি সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন