আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি বিএনপির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরফাইল ছবি

ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ সফল করতে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের মাঠে অর্ধলক্ষাধিক নেতা-কর্মী জড়ো হবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। স্থলবন্দরে প্রস্তুত আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আখাউড়া বন্দর ও আশপাশ এলাকা ঘুরে গেছেন। এ সময় যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, জেলা বিএনপির সদস্য কবির আহমেদ ভূঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক মো. মাসুম ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কাল বুধবার সকালে বিএনপির তিন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চের উদ্দেশে রওনা হবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের মাঠে তাঁরা জড়ো হবেন। সোমবার আয়োজক তিন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের পরিদর্শনের পর মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থল আখাউড়ায় প্রস্তুতি নেন। দুপুরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান ও বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এস এম জাবের বিন জব্বার অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম ও বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কবির আহমেদ ভূঁইয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান ও সদস্যসচিব সমীর চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার সন্ধ্যায় আখাউড়া বন্দরের কাস্টমস এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে লংমার্চ নিয়ে আলাপ করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোনায়েম মুন্না। তিনি বলেন, ‘লংমার্চ সফলে আমরা এখানে এসেছি। আমরা কোথায় কী করব, সেটা দেখতে এসেছি। আলোচনা করে সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করা হবে।’

মোনায়েম মুন্না বলেন, ‘বিএনপি জনগণের দল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে আপসহীন। বিএনপি চেয়ারপারসন আগেই বলেছেন, “দেশের বাইরে আমাদের প্রভু নেই, বন্ধু আছে।” বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, “স্বাধীনতা ও সার্বভৌমিত্ব প্রশ্নে কোনো আপস নয়।” লংমার্চ থেকে আমরা ভারতকে এসব বার্তা দিতে চাই।’

ভারতের আগ্রাসী মনোভাব ও ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যাচারের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি মন্তব্য করে মোনায়েম বলেন, ‘আগরতলায় আমাদের সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় প্রতিবাদী পদযাত্রা করেছি এবং স্মারকলিপি দিয়েছি। দেশের প্রশ্নে আমরা আপসহীন থাকতে চাই।’

জেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সমীর চক্রবর্তী বলেন, ‘লংমার্চকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা অনুসারে আয়োজনকে সফল করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। অনুষ্ঠান সফল হবে। গণতন্ত্র ও দেশের প্রশ্নে আপস নয়।’

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কবির আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সুপার ও বিজিবির অধিনায়ক অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিজিবি-পুলিশ সার্বক্ষণিক তদারক করছে। ঢাকা থেকে নেতা-কর্মীদের দুই হাজার গাড়ি আসবে। জেলার নেতা-কর্মীদের তিন থেকে চার হাজার গাড়ি থাকবে। আমরা অনুষ্ঠানস্থল এলাকার পাশে একটি খালি জায়গায় পাঁচ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি, আখাউড়া বন্দরে বিএনপির ৫০ হাজার নেতা-কর্মী জড়ো হবেন। জেলার ১৪টি ইউনিট ও ৯টি উপজেলার নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবে। স্থলবন্দরের মাঠে তাঁরা অনুষ্ঠান করবেন। সেখানে জড়ো হবেন কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীরা। স্থলবন্দরের মাঠে দুটি বড় ফটক আছে। নিরাপত্তার কারণে দ্বিতীয় ফটকটি বন্ধ থাকবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অনুষ্ঠান সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। অর্ধলক্ষাধিক নেতা-কর্মী আখাউড়া স্থলবন্দরে জড়ো হবেন।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, লংমার্চকে কেন্দ্র করে স্থলবন্দরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পুলিশ ফোর্সের ১৫০ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, আখাউড়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। সব বাহিনী প্রস্তুত আছে।