১৬টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম

যশোর জেলার মানচিত্র

যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪২ শিক্ষার্থী আছে, এর বিপরীতে শিক্ষক আছেন ৬ জন। জেলায় ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এমন ১৬টি বিদ্যালয়ের তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এসব বিদ্যালয় অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার প্রক্রিয়া চলছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ১৬টি বিদ্যালয়ের তালিকা প্রস্তুত করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বিদ্যালয়ের নাম, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, জমির পরিমাণ উল্লেখ করা আছে। এ ছাড়া যে বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে, সে বিদ্যালয়ের নাম, বর্তমান বিদ্যালয় থেকে একীভূত প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের দূরত্ব, প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় থাকা বিদ্যালয়গুলোর কোনোটির এলাকার জনসংখ্যা কম। আবার কোনোটির বিদ্যালয়ের দুই কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির পর যশোর জেলার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এগুলো একীভূত করা হবে।
আশরাফুল আলম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে অভয়নগর উপজেলার হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮ শিক্ষার্থী), কেশবপুরের সানতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৮ জন), পল্লী মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৪ জন), ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮ জন), তেঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৪৪ জন), মনিরামপুর উপজেলার পাঁচকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৪৫ শিক্ষার্থী), ভুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৮ জন), দক্ষিণ পাঁচকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩০ জন), কুমারসীমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩১ জন), গোপমহল মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৪ জন), কামিনীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৫ শিক্ষার্থী), হাটগাছা মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৯ জন), উত্তর দহাকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৩ জন), বয়ারখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৩ শিক্ষার্থী), জোকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৪৭) ও সদর উপজেলার দক্ষিণ ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৪২ শিক্ষার্থী)।

সদর উপজেলার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, দক্ষিণ ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এলাকায় ইটের ভাটা ও ফাঁকা মাঠ বেশি। জনসংখ্যা কম। এই বিদ্যালয়সহ আশপাশের দুই কিলোমিটারের মধ্যে ভাটপাড়া, তুলাগোলদারপাড়া, কামালপুর, সতিঘাটাসহ মোট পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যে কারণে শিক্ষার্থী কম। পার্শ্ববর্তী যেকোনো একটি বিদ্যালয়ের সঙ্গে দক্ষিণ ভাটপাড়া বিদ্যালয়টি একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

অভয়নগর উপজেলার হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১৮ জন, ৬ জন শিক্ষক আছেন। বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বলছেন, হরিশপুর গ্রামটি আয়তনে ছোট ও জনসংখ্যাও কম। এ ছাড়া দুই কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ১৬টি বিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির পর যশোর জেলার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরপরেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা না বাড়ায় অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।