মধ্যনগরের জলমহাল সাবলিজ দেওয়ায় ইজারা বাতিল

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র

জলমহালের ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে সাবলিজ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মুকশেদপুর দিগর জলমহালটির ইজরা বাতিল করেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বাংলা ১৪২৯ সনের অবশিষ্ট সময়ের জন্য ওই জলমহালটি পাশের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারের বাসিন্দা রেজুয়ান খানকে খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ওই জলমহালটির দখলনামা তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার মুকশেদপুর দিগর জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন। বাংলা ১৪২৯ সন থেকে ১৪৩১ সন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য বার্ষিক ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই জলমহালটি ইজারা পায় জামালগঞ্জ উপজেলার সোনার বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির পক্ষ থেকে ১৪২৯ সনের ইজারামূল্যসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু সমিতির সদস্যরা এই জলমহালটি নিজেরা ভোগদখল না করে তা অন্যত্র সাবলিজ দেন। এ নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্তে সাবলিজের অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় এই জলমহালটির ইজারা বাতিল করে দেয় জেলা প্রশাসন। ওই জলমহালটি খাস আদায়ের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ধর্মপাশার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সমিতির সদস্যরা এই জলমহালটি নিজেরা ভোগদখল না করে তা অন্যত্র সাবলিজ দেন। এ নিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

গতকাল সোমবার খাস কালেকশনের মাধ্যমে ইজারা দেওয়ার জন্য বিধি মোতাবেক আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। জলমহালটি ইজারা পাওয়ার জন্য সাতজন আবেদন করেন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১৪২৯ বঙ্গাব্দের অবশিষ্ট সময়ের জন্য জলমহালটি ৮ লাখ ১ হাজার টাকা ইজারামূল্যে ইজারা পান জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারের বাসিন্দা রেজুয়ান খান। তিনি জলমহালটির ইজারামূল্য পরিশোধ করায় আজ বিকেলে সরেজমিনে  জলমহালটির দখলনামা বুঝিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত ইউএনও। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার আবদুল মোনায়েম খান, অফিস সহকারী আবুল হাসান প্রমুখ।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য সোনার বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও মুকশেরপুর দিগর জলমহালটির ইজারাদার এনামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মধ্যনগর উপজেলার মুকশেদপুর দিগর জলমহালটির ইজারাদার শর্ত ভঙ্গ করে সাবলিজ দেওয়ায় এটির ইজারা বাতিল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা এই জলমহালটি খাস কালেকশনের মাধ্যমে ১৪২৯ বঙ্গাব্দের অবশিষ্ট সময়ের জন্য ইজারা দিয়েছি। যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করায় মঙ্গলবার বিকেলে জলমহালটি খাস কালেকশনের পাওয়া ব্যক্তিকে এটির দখলনামা বুঝিয়ে দিয়েছি।’