গাজীপুরে দুবাইপ্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যা, দুই চাচাতো ভাই গ্রেপ্তার

হত্যা
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে মোক্তার হোসেন ফকির (৪৩) নামের এক প্রবাসীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার এক দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তরা লেক ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

নিহত মোক্তার হোসেন ফকির কালীগঞ্জের বক্তারপুর ইউনিয়নের গোয়ালিয়া বাড়ি এলাকার মৃত হাসান আলী ফকিরের ছেলে। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকেন। সম্প্রতি ছুটিতে তিনি দেশে আসেন। ৭ অক্টোবর তাঁর দুবাই ফেরার কথা ছিল।

গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি হলেন শারফুদ্দিন ফকির (৩৮) ও রিপন ফকির (৩০)। তাঁরা নিহত মোক্তারের চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় করা মামলায় ওই দুজন ছাড়াও তাঁদের বাবা (মোক্তারের চাচা) আলম ফকির (৬০), শারফুদ্দিনের স্ত্রী চম্পা বেগম (৩০) ও রিপনের স্ত্রী রুমি আক্তারকে (২৭) আসামি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মোক্তারকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। সে সময় মোক্তারকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাঁর মেয়ে, স্ত্রী, দুই ভাইকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোক্তার হোসেন ফকির সম্প্রতি তাঁর চাচাতো বোন মোসলেমা বেগমের কাছ থেকে জমি কেনেন। গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেই জমি মাপা হচ্ছিল। এ সময় জমির সীমানা নির্ধারণ করে পিলার স্থাপন করা নিয়ে চাচাতো ভাই শারফুদ্দিন, রিপন ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মোক্তারকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। সে সময় মোক্তারকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাঁর মেয়ে মরিয়ম আক্তার (১৭), স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (৩৫), ভাই সারোয়ার ফকির (৫০) ও আক্তার ফকিরকেও (৩৬) পিটিয়ে আহত করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোক্তার ও অন্যদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে মোক্তারকে পরে ঢাকার উত্তরা লেক ভিউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলে মোক্তারের ভাই সুরুজ মিয়া কালীগঞ্জ থানায় হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেন। এরপর পুলিশ অভিযুক্ত শারফুদ্দিন ও রিপনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। পরে মোক্তারের মৃত্যুর পর আগের মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ ঢাকায় ময়নাতদন্তের পর এলাকায় আনা হবে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।