এক দিনের ব্যবধানে ট্রেনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে দুই ব্যক্তি, পঞ্চগড়ের হাসপাতালে ভর্তি

দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা থেকে গতকাল বুধবার রাতে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায়। ওই ট্রেনের একটি কামরা থেকে নামানো হয় অচেতন হয়ে পড়া আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী এক যাত্রীকে। চলন্ত ট্রেনে তিনি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারান। পরে রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) সহায়তায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরা তাঁকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ব্যক্তির জ্ঞান না ফেরায় তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এর ঠিক এক দিন আগে গত মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী থেকে আসা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড়ে এসে পৌঁছালে সেখানেও একটি কামরা থেকে আনুমানিক ৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে তাঁকেও ভর্তি করা হয় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে। তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়ার আগেই তিনি কিছুটা সুস্থ হলে বুধবার কাউকে কিছু না বলেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনে যাতায়াত করা যাত্রীদের উদ্দেশে বারবার মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়, অপরিচিত কারও দেওয়া কিছু না খেতে। তারপরও অজ্ঞান পার্টির চক্রগুলো সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষদের লক্ষ্য করে এমন অপকর্ম চালাচ্ছে। এতে কোনো না কোনো যাত্রী তাদের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন।

আরএনবির হাবিলদার সফিকুল ইসলাম বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস থেকে যে বয়স্ক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি ভালোভাবে কথা বলতে পারছিলেন না। তবে ভাঙা ভাঙাভাবে একবার বলেছেন, তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি ট্রেনে একজনের দেওয়া কলা-পাউরুটি খেয়েছিলেন। এরপর তিনি নিজের নাম বা অন্য কিছুই বলতে পারেননি। উদ্ধারের সময় ওই ব্যক্তির পাঞ্জাবির ভেতরের একটি পকেট থেকে একটি ৫০০ টাকার নোট, অন্য একটি পকেট থেকে একটি টর্চলাইট ও এক পাতা ওষুধ পাওয়া গেছে। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে তিনি টাকাপয়সাসহ কাপড়চোপড়ের ব্যাগ হারিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। জিআরপি পুলিশের সহায়তায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মাসুদ পারভেজ বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বারবার যাত্রীদের অন্যের দেওয়া কোনো কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে ঘোষণা দেয়। তারপরও কিছু সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ এ ধরনের বিপদের সম্মুখীন হন। এ ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তবে ট্রেনযাত্রায় সবাইকে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) দিনাজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকালে যে যাত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, তিনি সুস্থ হলেই তাঁর কথা শুনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা যাত্রীদের সচেতন থাকতে বারবার মাইকিং করছি। তারপরও কিছু যাত্রী না বুঝে অন্যের দেওয়া খাবার খাচ্ছেন। ট্রেনযাত্রা নিরাপদ করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।’