শিশুর কান্না শুনে ঘরে গিয়ে পাওয়া গেল দম্পতির ঝুলন্ত লাশ

দিনাজপুর জেলার মানচিত্র

সকালে ঘরের মধ্যে শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান রবিউল ইসলামের ছোট বোন। এরপর তিনি ওই ঘরে গিয়ে একই রশিতে ভাই–ভাবির লাশ ঝুলতে দেখেন। পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে।

আজ রোববার সকালে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের মারগাঁও গ্রামের নেজামউদ্দিন হাজিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া দুজন হলেন রবিউল ইসলাম (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী শামসুন্নাহার (৩০)।

রবিউল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। তিনি নেজামউদ্দিন হাজিপাড়া এলাকার মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। শামসুন্নাহার একই গ্রামের শমসের আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন রবিউল ও শামসুন্নাহার। আজ সকাল সাতটার দিকে তাঁদের ছয় মাস বয়সী মেয়েশিশুর কান্নার শব্দ পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে রবিউলের বোন ছুটে আসেন। ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া না পেয়ে দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে রবিউল ও শামসুন্নাহারের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি।

শামসুন্নাহারের মা জান্নাতুন বেগম দাবি করেন, তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওই দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ১২ বছর আগে শামসুন্নাহারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রবিউলের। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এ নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্য সালিসও হয়েছে। সর্বশেষ সপ্তাহখানেক আগে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই দম্পতি।

পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, সাত বছর আগে রবিউল তাঁর ছয় বছর বয়সী ছেলেকে বিষ খাওয়ান। নিজেও বিষপান করেন। সেবার ছেলে বিষপানে মারা গেলেও বেঁচে যান রবিউল।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় প্রথম আলোকে বলেন, রবিউল ও শামসুন্নাহারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এই দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন। প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।