নোয়াখালীর শাহজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের ৩ নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে শাহজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ৩ নম্বর কূপে পরীক্ষমূলক আগুন জ্বালানো হয়। গতকাল দুপুরে চর কাঁকড়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহাজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের আওতাধীন ৩ নম্বর কূপে (চরকাঁকড়া) গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে কূপটির সর্বনিম্ন স্তরে (লোয়ার জোন) আগুন জ্বালানো হয়। গত বছরের নভেম্বরে শুরু হওয়া কূপ খননের কাজ শেষ হয় গত শুক্রবার।

প্রাথমিকভাবে কূপটির তিনটি জোনে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এখন চলছে ডিএসটি টেস্ট। টেস্ট শেষে জানা যাবে এখানে মজুত মোট গ্যাসের পরিমাণ। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) চরকাঁকড়া ৩ নম্বর কূপের ড্রিলিং ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গ্যাসের যে তীব্র সংকট চলছে, এই সংকটময় মুহূর্তে এই কূপে গ্যাস প্রাপ্তি অনেক আশার আলোর জন্ম দিয়েছে। আগামী তিন দিন ৩ নম্বর কূপের তিনটি স্তরে গ্যাসের ডিএসটি টেস্ট করা হবে। এরপর কূপে গ্যাসের মোট মজুত সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় পাইপলাইন বসানোর পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হবে।

বাপেক্সের সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র–সংশ্লিষ্ট সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, শুক্রবার বাপেক্সের খনন কার্যক্রম শেষে গতকাল থেকে পরীক্ষামূলক ডিএসটি টেস্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন চলছে লোয়ার জোনের টেস্ট। কূপটির মোট ৩ হাজার ৩৮৫ মিটার গভীরে খনন করা হয়েছে, যার মধ্যে লোয়ার জোনের ৩ হাজার ৪১ মিটার থেকে ৩ হাজার ৪৬ মিটার এবং ৩ হাজার ৫৭ মিটার থেকে ৩ হাজার ৬৪ মিটার পর্যন্ত টেস্ট কার্যক্রম চলছে। এরপরই অপর দুটি জোনের টেস্ট কার্যক্রম চলবে। ডিএসটি টেস্টের পরেই এখানে মোট মজুতের পরিমাণ জানা যাবে।

সূত্র আরও জানায়, এই কূপ থেকে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে লোয়ার জোনে গ্যাসের চাপ দেখে মনে হচ্ছে, এই কূপ থেকে আরও বেশি পরিমাণ গ্যাসও পাওয়া যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহাজাদপুর-সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রটির ১ নম্বর কূপ উৎপাদনের যাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর একই গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপেরও খনন করা হয় এবং গ্যাসের উত্তোলন করা হয়। বর্তমানে গ্যাসক্ষেত্রটির আওতাধীন পার্শ্ববর্তী চরকাঁকড়া এলাকায় তৃতীয় কূপ খননে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেল।