এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি

বরিশাল নগরের সদর রোডে সিটি কলেজের কর্মচারীরা দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেন। বুধবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

দেশের সব এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের ঈদ বোনাস ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোর কর্মচারীদের ঈদ বোনাস বৃদ্ধি করা হয়নি। শিক্ষকদের মতো ঈদ বোনাস ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে দেশের সব এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার কর্মচারীরা আজ বুধবার দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসূচির সময় বরিশালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।

বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক জিয়া শাহীন বলেন, দীর্ঘদিনের দাবির পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ঈদ বোনাস বাড়ানো হয়নি। অথচ শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ হারে বোনাস বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে সচিবালয় থেকে শুরু করে অধিদপ্তর পর্যন্ত যোগাযোগ করেছি। সবাই আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষকদের বোনাস বাড়লে আমাদেরটিও বাড়বে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের অবহেলাই করা হয়েছে।’

আন্দোলনরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা বলেন, কর্মচারীদের জীবনমান এখন মানবেতর। সকাল ৯টা থেকে রাত অবধি কাজ করতে হয়। অথচ দৈনিক মজুরি দাঁড়ায় ২৮০ থেকে ৩৭০ টাকার মধ্যে, যা একজন দিনমজুরের মজুরিরও অর্ধেক। কর্মচারীদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে শুধু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বোঝেন। তাঁরা বলেন, ২০০২ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ঈদ বোনাস শিক্ষকদের তুলনায় কর্মচারীদের দ্বিগুণ করে দিয়েছিল। এখন যেমন নিচের স্তরের কর্মচারীদের বেশি হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে বোনাসও বাড়ানো যেত।

বরিশাল নগরের আমানতগঞ্জ এলাকার ইসলামিয়া কলেজের কর্মচারীরা দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেন। বুধবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

আজ সকালে বরিশাল নগরের ইসলামিয়া কলেজ, সিটি কলেজ, বিএম স্কুল, এআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এই দাবিতে প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষ ছেড়ে বাইরে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন।

বরিশাল নগরের সিটি কলেজের অফিস সহকারী আবদুল আউয়াল বলেন, ‘একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি কাজ করি আমরা। সকালে প্রতিষ্ঠান খোলা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজ, ব্যবস্থাপনার কাজ আমাদেরই করতে হয়। অথচ আমরা যুগ যুগ ধরে অবহেলার শিকার। যে বেতন-ভাতা পাই, তা দিয়ে পরিবার নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন ধারণ করতে হচ্ছে।’

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব সোলায়মান প্রামাণিক বলেন, ‘কোরবানির ঈদের আগে আমাদের দাবি পূরণ না হলে কোরবানির পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।’