রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সিনহা কোল্ডস্টোরেজ থেকে ডিজিটালের মোড় পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য সাত কিলোমিটার। এটি তারাগঞ্জ সদরের সঙ্গে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ৩৫ হাজার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র পাকা সড়ক। সড়কটির চাপরার পার কবরস্থান থেকে ডিজিটালের মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বেহাল হয়ে আছে। সড়কের ওই অংশে পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সড়কটি সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা।
এলাকার শিক্ষক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার অন্তত ২০ জন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ বছর আগে সিনহা কোল্ডস্টোরেজ থেকে ডিজিটালের মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়। সড়কটি দিয়ে হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ হেঁটে ও যানবাহনে উপজেলা সদর, রংপুর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির ওই দুই কিলোমিটার অংশ সংস্কার না করায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ১৪টি গ্রামের মানুষকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির হাড়িয়ারকুঠির চাপরার পার কবরস্থান থেকে ডিজিটালের মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। কোথাও কোথাও সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। হেলেদুলে যাত্রী ও মালামাল নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে যানবাহনগুলো।
ওই সড়কের নিয়মিত রিকশাচালক ডাংগীরহাটের গ্রামের নুর হোসেন বলেন, ‘সড়কটা মেলা দিন থাকি নষ্ট। এদি গাড়ি চালাইতে খুব কষ্ট হয়। আধা ঘণ্টার রাস্তা এখন এক ঘণ্টাত যাবার নাগে। ভয়ে থাকি কখন রিকশা উল্টি যায়।’
মধ্যপাড়া গ্রামেরর বাসিন্দা হাতিবান্ধা বাজারে সবজি ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, ‘খরার সময় তো ধুলাত কষ্ট করি ভাঙা রাস্তাটা দিয়া চলাচল করি। কিন্তু সামনোত বর্ষা। বর্ষাত গর্তে কাদাপানিতে একাকার হয়া যায়। চলাচল করতে কষ্ট হয়।’
ওই সড়কের ডিজিটালের মোড়ে কথা হয় শেখপাড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সড়কটা হওয়ার পর হামার কষ্ট কমি গেছলো। কিন্তু এ্যালা সড়কের মেলা জায়গাতে গর্ত হইচে। কোন কোন জাগাত সড়ক নালার মতন সরু হইছে। কোনটে খালি খোয়া বের হয়া আছে। বহুদিন থাকি সড়কটা মেরামত না করায় এ্যালা আগের থাকি কষ্ট বাড়ছে।’
হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুমারেশ রায় বলেন, হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের প্রধান ও একমাত্র পাকা সড়ক এটি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের মানুষ, ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজারো শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াত করেন। সড়কটি সংস্কার না করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হচ্ছে। সড়কটি সংস্কারে জন্য উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, সাত কিলোমিটারের ওই সড়কের গত বছর দুই কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বাকি অংশ সংস্কার করা হবে।