বিএনপির লোগো

ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা বিএনপির ৬২৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, যানবাহন ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। গত শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাইজুল ইসলাম। মামলায় যে ঘটনাস্থলের কথা বলা হয়েছে, সেখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার সেখানে যানবাহন ভাঙচুর বা নাশকতার কোনো ঘটনা তাঁরা ঘটতে দেখেননি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মহানগর ও উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে নগরের হরিকিশোর রায় সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ওই দিন বিকেলে নগরের বাগানবাড়ি (রামবাবু সড়ক) এলাকায় সড়কে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, যানবাহন ভাঙচুর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মামলা করেন কোতোয়ালি থানার এসআই তাইজুল ইসলাম। এতে বিএনপির ২৫ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে যানবাহন চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যানবাহন ভাঙচুর ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করেন আসামিরা। ওই এলাকা থেকে পুলিশ ৩৫টি ভাঙা কাচের টুকরা ও ১১৫টি ইটের টুকরা উদ্ধার করে।

নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য মামলার এজাহারে যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, আজ সোমবার সকালে সেই রামবাবু সড়কের একটি পোশাকের দোকান, একটি ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান ও একটি চায়ের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রথম আলোর এই প্রতিবেদক। তিনটি দোকানের কর্মীরা বলেন, শনিবার বিকেলে ওই এলাকায় কোনো ধরনের ভাঙচুর বা নাশকতার ঘটনা তাঁরা ঘটতে দেখেননি। রামবাবু সড়কের পাশে বাগানবাড়ি এলাকায় বিএনপির নেতা আবু ওয়াহাব আকন্দের বাড়ি হওয়ায় সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভিড় থাকে। বিশেষ করে যেদিন দলীয় কর্মসূচি থাকে, সেদিন কর্মসূচির আগে ও পরে প্রচুর নেতা-কর্মী ওই এলাকায় অবস্থান করেন। একই সঙ্গে ওই এলাকায় পুলিশও অবস্থান করে।

মামলার বিষয়ে কথা বলতে বাদী এসআই তাইজুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।

মামলায় ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দকে আসামি করা হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দিন কোনো ভাঙচুর বা নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, পুলিশ ওই দিন ওই সময় কোনো ধরনের ভাঙচুর বা নাশকতার ঘটনা প্রমাণ করতে পারবে না। মামলায় ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়েছে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিট। সিটি করপোরেশনের বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে ওই সময় কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি আরও বলেন, কর্মসূচি শেষে নেতা-কর্মীরা বাগানবাড়ি এলাকায় তাঁর বাড়িতে যান। পরে তাঁর বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় চারজনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার বিকেলে বাগানবাড়ি এলাকায় বেশ কিছু অটোরিকশা (ইজিবাইক) ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া বিএনপির কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী মানুষের চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টি করে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব ঘটনার সত্যতা পায়। ঘটনাস্থল থেকেই চারজনকে আটক করে পুলিশ।