নোয়াখালীতে স্কুলছাত্রী হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি

সচেতন নোয়াখালীবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীতে নিজ বাসায় স্কুলছাত্রীকে (১৪) হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এবং শহরের টাউন হল মোড়ের মাইজদী-সোনাপুর সড়কে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। সচেতন নোয়াখালীবাসীর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে এক স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত স্কুলছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন আবদুর রহিম, মো. সাঈদ ও মো. ইসরাফিল।

আরও পড়ুন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, নিহত ছাত্রীর সহপাঠী ও স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন শহরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা স্কুলছাত্রীর হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সহপাঠীরা সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়লে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সচেতন নোয়াখালীবাসীর আহ্বায়ক মুনীম ফয়সালের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন নোয়াখালী পল্লী উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী আবদুল আউয়াল, নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্যসচিব জামাল হোসেন, সার্ভিস ফর হিউম্যান বিয়িং অর্গানাইজেশনের সভাপতি ফরিদা সুলতানা, আলোকিত মানবিক অর্গানাইজেশনের সভাপতি পারভেজ মোল্লাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সমাবেশে বক্তারা নোয়াখালীর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় প্রমাণিত হলো, আমাদের মেয়েরা আজ নিজ বাসায়ও নিরাপদ নয়। পাড়ায় পাড়ায় কিশোর গ্যাং ও উঠতি বয়সের অপরাধীদের দৌরাত্ম্যের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে।’

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারীরা শহরের প্রধান সড়কে (মাইজদী-সোনাপুর) বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বেলা সোয়া ১১টার দিকে টাউন হলের মোড়ে আসে। এ সময় মিছিলকারীরা সড়কের ওপর অবস্থান করে প্রায় ২০ মিনিট বিক্ষোভ করেন। পরে সুধারাম থানা–পুলিশের একটি দল তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্রী হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আবদুর রহিম ওরফে রনি প্রধান অভিযুক্ত। অন্য দুজন উত্ত্যক্তের ঘটনায় অভিযুক্ত। আবদুর রহিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি না হলে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করা হবে। এ ছাড়া আটক অন্য দুজনের মধ্যে সাঈদকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আর ইসরাফিলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।