সুইমিংপুলে মৃত্যুর বিচারসহ চার দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্যারিস রোডেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনের প্যারিস রোড অবরোধ করে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, সায়মা, সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে, কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, রাবি মেডিকেল সংস্কার’, ‘অবহেলায় শিক্ষার্থী মরে, প্রশাসন কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থীদের অন্য তিনটি দাবি হলো প্রশাসনের মাধ্যমে সায়মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সুইমিংপুলের একটি অংশের গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।

ঈশিতা পারভীন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি মনে করি এটি একটা হত্যাকাণ্ড। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেমের কারণে এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের সঠিক ট্রিটমেন্ট পেলে কোনো শিক্ষার্থী মারা যেত না। আমাদের দাবি, এই হত্যার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং যারা এই অবহেলা করেছে তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। সায়মার পরিবারকে এমনভাবে আর্থিক সমর্থন জোগাতে হবে যেন তাদের অভাব না হয়।’

আরেক শিক্ষার্থী আবদুল আজিজ বলেন, ‘প্রশাসনকে তিন দিনের সময় দিয়েছি। এর মধ্যে তারা যদি কোনো সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারে, তাহলে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। এখন শুধু সমাজবিজ্ঞান বিভাগ আন্দোলন করছে, তিন দিন পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০টি বিভাগ আমাদের সঙ্গে নেমে আসবে।’

আরও পড়ুন

আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই যেন দুর্ঘটনা নাম দিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা না করা হয়। এটা স্পষ্ট অবহেলা, যার জন্য কমপক্ষে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়া উচিত। প্রশাসন যদি এখনো ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে আজ সায়মা মারা গেছে, কাল আমরা মারা যাব। কোনো যেনতেন তদন্ত রিপোর্ট আমরা মানব না।’

গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নেমে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন