নিজেরা নিজেরা লড়বেন আওয়ামী লীগের নেতারা 

আগামী ৮ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে চার উপজেলায়। চেয়ারম্যান পদে ১৪ জনের মধ্যে সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে প্রথম ধাপে কুমিল্লার চার উপজেলায় গতবারের মতো এবারও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ লড়াই হচ্ছে। চার উপজেলার মধ্যে নাঙ্গলকোটে নতুন মুখ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। লাকসামে আওয়ামী লীগের একই কোরামের দুজন প্রার্থী হয়েছেন। একজনকে ‘ডামি’ প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। মেঘনা ও মনোহরগঞ্জে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। 

আগামী ৮ মে ভোট অনুষ্ঠিত হবে ওই চার উপজেলায়। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান গতকাল বুধবার চার উপজেলার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। এতে জেলার চার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী ১৪ জনের সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মেঘনা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর সংখ্যা পাঁচ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের চারজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম তাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহ মিয়া ওরফে রতন শিকদার, সাবেক চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক আবদুস সালাম। চারজনই জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। এই উপজেলায় মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন প্রথমবার নির্বাচন করছেন। অপর তিন প্রার্থী এর আগেও নির্বাচন করেছেন একই পদে। 

জানতে চাইলে মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলম বলেন, প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে দল। নেতা-কর্মীরা যাঁকে যোগ্য মনে করবেন, তাঁকে ভোট দেবেন। 

লাকসামে চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এর মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। লাকসাম উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইউনুস ভূঁইয়া ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য শম্ভু সাহা। ইউনুস ভূঁইয়া এ নিয়ে টানা তিনবার প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৪ সালে ভোটে, ২০১৯ সালে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হন। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর অনুসারী তিনি। ইউনুস ও শম্ভু সাহা উপজেলা আওয়ামী লীগের একই কোরামের লোক। ফলে শম্ভু সাহাকে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা ‘ডামি’ প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। যদিও মো. ইউনুস ভূঁইয়া বলেন, নির্বাচন হবে। প্রার্থী আছেন। ভোটাররা যাঁকে ইচ্ছা ভোট দেবেন। 

মনোহরগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মান্নান চৌধুরী, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোসা আফরোজা কুসুম। জাকির হোসেন ২০১৯ সালে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। আবদুল মান্নান চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তিনি নাথেরপেটুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হন। তিনিও মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন। আফরোজা কুসুম টানা তিনবারের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। 

নাঙ্গলকোট উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ ভূঁইয়া ও ঢালুয়া ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাছান বাছির ভূঁইয়া। দুজনই গতকাল জেলা নির্বাচন অফিসে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাঁরা জয়ী হবেন। 

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম মজুমদার বলেন, দল প্রার্থিতা উন্মুক্ত করেছে। যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁরা জয়ী হবেন।