দলীয় কোন্দলে ভাগ হয়ে গেল লালপুর আওয়ামী লীগের কার্যালয়

ফিতা কেটে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন আরেকটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধায় গোপালপুরে
ছবি: প্রথম আলো

দলীয় কোন্দলের জেরে নাটোরের লালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও বিভক্ত হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরও একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের উদ্যোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম এ কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগ চার ভাগে বিভক্ত। প্রায় সাত বছর পর গত বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের অনুসারী তৎকালীন সভাপতি আফতাব হোসেনকে আবার সভাপতি করা হয়। আগের সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলীকে বাদ দিয়ে শামীম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। শামীম আহমেদ জেলার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের অনুসারী। ফলে শুরু থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়। দলীয় কর্মসূচিতে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায় না। লালপুরে উপজেলা আওয়ামীর লীগের কার্যালয় থাকলেও সেখানে সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর অনুসারীরা বসেন না। সভাপতি আফতাব হোসেন ওই কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা গেছে। এমনই প্রেক্ষাপটে আজ সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। আমন্ত্রণপত্রে বিশেষ অতিথি হিসেবে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকসানা মোর্ত্তজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেনের নাম উল্লেখ থাকলেও তাঁরা কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘২০ বছর ধরে লালপুর বাজারে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ ব্যাপারে কারও কোনো আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য আলাদা কার্যালয় খুলে বিভক্তি ডেকে আনা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের পরামর্শ মোতাবেক নতুন কার্যালয় স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এতে সভাপতি সম্মতি দেননি। কারণ, লালপুরের কার্যালয়টি তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি গোপালপুরে উপজেলা সদরে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থাকলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা সহজ হয়। তাই এখানে স্মার্ট কার্যালয় উদ্বোধন করা হলো। এতে সভাপতিসহ কারও কারও আপত্তি থাকতে পারে। তবে ভবিষ্যতে সমন্বয় করে নেওয়া হবে।