‘বিএনপিকে কোনোভাবেই রাজপথ থেকে সরানো যাবে না’

সারা দেশে বিএনপির সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন দলটির নেতা–কর্মীরা।গতকাল বেলা ১১টায় বিএনপি নগর কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর মিরপুরসহ সারা দেশে বিএনপির সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন দলটির নেতা–কর্মীরা। নগরের সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আজ রোববার বেলা ১১টায় বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে এ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বিএনপির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে এবং খুন-জখম ও গ্রেপ্তার করে সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বিএনপির দুর্বার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপিকে রাজপথ থেকে কোনোভাবেই সরানো যাবে না।

সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে একটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের অধিকারহরণকারী অপশক্তি। অতীতেও দলটি একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে এ দেশের মানুষের বাক্‌স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র হরণ করেছিল। এখনো তারা একই উদ্দেশ্যে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ জন্য পুরোপুরি উসকানি দিয়ে দেশে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গণতন্ত্রবিরোধী দলকে রাজনীতি ও নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তারা এ অপতৎপরতা শুরু করেছে। এ জন্য আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। সারা দেশে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে বিভিন্ন উপজেলার নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ। আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মিজানুর রহমান, সদস্য আবদুস ছাত্তার খান, আবদুল গফফার তালুকদার, জহির সাজ্জাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আবদুল্লাহ, উত্তর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন, বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সবুজ আকন প্রমুখ।

নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করছে অভিযোগ তুলে বিএনপির নেতারা বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ যে কাজ করতে চাচ্ছে, তা হলো এখানে যেন নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি না হয়, যাতে নিরপেক্ষ সরকার কিছুতেই না করা যায়। একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করতে তারা এমন নির্বাচন করতে চায়, যে নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল থাকবে না। আওয়ামী লীগ নিজেরা বিরোধী দল তৈরি করে ক্ষমতাকে অবৈধভাবে আঁকড়ে থাকতে চায়। কিন্তু সরকারের এ দিবাস্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। কারণ, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।  বিএনপির নেতা-কর্মীরা এই সরকারের পতনের এক দফা দাবি নিয়ে রাজপথে আছেন, থাকবেন। জনগণের ঐক্য দেখে সরকার ভয় পেয়েছে, তাই বিএনপির সমাবেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করছে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।

প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে দলের তিন নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার সমাবেশ করে বিএনপি। রাজধানীর পল্লবী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে আজ সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।