ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধরের মামলা
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসানের বিরুদ্ধে উচ্চমাধ্যমিকের (এইচএসসি) তিন পরীক্ষার্থীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বগাদানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা–বিষয়ক সম্পাদক।
গতকাল শনিবার রাতে ভুক্তভোগী এক পরীক্ষার্থী সোনাগাজী মডেল থানায় রবিউলসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় সংবাদ প্রচারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিনকে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন রবিউল হাসান, তাঁর সহযোগী মো. তুষার, মো. মুরাদ ও মো. ফারুক। পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার একটি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা শেষ করে বের হন তিন ছাত্রী। এ সময় তাঁদের পিছু নেন ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান ও তাঁর সহযোগীরা।
একপর্যায়ে তাঁরা নানাভাবে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেন। প্রতিবাদ করলে তাঁরা ছাত্রীদের চড়থাপ্পড় ও লাথি মারেন। পরে ছাত্রীরা দ্রুত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
রবিউল ও তাঁর সহযোগীরা অটোরিকশার পিছু নেন। তাঁদের গতিরোধ করে ছাত্রীদের অটোরিকশা থেকে নামিয়ে আবারও মারধর করেন তাঁরা। ছাত্রীদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম বলেন, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গত শুক্রবার রাতে গিয়াস উদ্দিন নামের এক স্থানীয় সংবাদকর্মী মুঠোফোনে এ বিষয়ে রবিউলের বক্তব্য জানতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়াস উদ্দিনকে গালাগাল, মারধরের পাশাপাশি সংবাদ প্রকাশিত হলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেন রবিউল, তাঁর বাবা ও কয়েক সহযোগী। এ ঘটনায় গিয়াস উদ্দিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এস এম অনীক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ওই তিন পরীক্ষার্থী নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ছাত্রীদের কেউ বাধা দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রবিউলের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলার বিষয়টি তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছেন। গতকাল রাতে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।