ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বাদীর বাড়ির সামনে উল্লাস

টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উল্লাস এবং মামলার বাদীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগীর পুরো পরিবার। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন শিশুর মা। এদিকে পুলিশ আজ সোমবার ধর্ষণচেষ্টার মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে আলেফ শেখ (৭০) নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ওই শিশু চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ওই দিনই শিশুর মা বাদী হয়ে গোপালপুর থানায় মামলা করেন। রাতেই পুলিশ আলেফ শেখকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার আলেফ শেখ আদালত থেকে জামিন পান। জামিন পাওয়ার পর রাত ৯টার দিকে আলেফকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। তাঁরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিভিন্ন পাড়ায় আলেফ শেখকে নিয়ে নেচেগেয়ে মহড়া দেন। পরে মামলার বাদীর বাড়ির সামনে গিয়ে উল্লাস করেন।

বাদী অভিযোগ করেন, এ সময় আলেফ ও তাঁর স্বজনেরা তাঁদের গালাগাল করেন এবং এ মামলা করার প্রতিশোধ নেবেন বলে হুমকি দেন। এই উল্লাসের সময় আতঙ্কে ওই শিশু এবং তার পরিবারের সবাই ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় গত শনিবার তিনি গোপালপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ব্যাপারে আলেফ শেখের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় আলেফ শেখের বিরুদ্ধে সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা গোপালপুরের হেমনগর তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) বশির আহমেদ জানান, তদন্তে আলেফ শেখের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ জানান, ধর্ষণচেষ্টা মামলার বাদীর বাড়ির সামনে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উল্লাসের ঘটনায় যে সাধারণ ডায়েরি হয়েছে, তা আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান খান জানান, ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যে উল্লাস করেছেন, এটা আইন পরিপন্থী কাজ। তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এই আসামির জামিন বাতিলের জন্য মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার পক্ষ থেকে তিনি আদালতে আবেদন জানাবেন।