রাকসু নির্বাচন
ভোট চেয়ে মুঠোফোনে কল-খুদে বার্তা শিবির ও ছাত্রদলের, আপত্তি গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন নম্বরে কল ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে ভোট চাচ্ছে। এ ঘটনায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন-সমর্থিত ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’–এর পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্যানেলটির সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল। তিনি বলেন, ‘আসন্ন রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বর দুটি রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেলের কাছে সরবরাহ করেছে। এর পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন থার্ড পার্টি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচারণামূলক বার্তা ও কল আসছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
ফুয়াদ রাতুল আরও বলেন, মুঠোফোন নম্বরের মতো সংবেদনশীল তথ্য অননুমোদিতভাবে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছে সরবরাহ করা মানে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত পরিসর ও ডিজিটাল নিরাপত্তাকে সরাসরি ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী নাফিউল ইসলাম (জীবন) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ শতাংশের বেশি অনাবাসিক শিক্ষার্থী আছে। তাঁদের সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের ফোন নম্বর নিয়ে নির্বাচনী বার্তা পাঠিয়েছি। এতে কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি।’
আর ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অনলাইন থেকে অফলাইন প্রচারণায় বেশি মনোযোগ দিয়েছি। আমরা ঢালাওভাবে সবাইকে বার্তা পাঠাইনি। হল প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কয়েকটি হলে আমাদের সমর্থিত প্যানেল থেকে স্বল্পসংখ্যক ছাত্রদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। মেয়েশিক্ষার্থীদের বিষয়টি যেহেতু সংবেদনশীল, সেহেতু তাঁদের মুঠোফোনে কোনো বার্তা পাঠানো হয়নি। আচরণবিধিতে এ বিষয়ে কিছু বলা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক শারমিন হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ছাত্রী হলে ছাত্রী সংস্থার কিছু মেয়ে এসে মোবাইল নম্বর চেয়েছিল। পরে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা বলেছি। তাঁরা ছাত্রীদের মোবাইল দিতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু কিছু হলের প্রাধ্যক্ষ আমাদের নির্দেশনা পাঠানোর আগেই শিক্ষার্থীদের ফোন নম্বর সরবরাহ করেছে কি না, তা আমার জানা নেই।’
বিষয়টি নির্বাচনের আচরণবিধির লঙ্ঘন নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটি আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।