সাভারে প্রাইড গ্রুপের দুই কারখানা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা

প্রাইড গ্রুপের কারখানা লে-অফ ঘোষণার নোটিশ
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভার উপজেলার উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের দুটি কারখানায় (আংশিক) বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ ঘোষণা করা হয়েছে। জ্বালানিসংকট, আর্থিক জটিলতা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে কার্যাদেশ–সংকটের কারণে কারখানা দুটির আংশিক বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কারখানা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কারখানা দুটি হলো এইচআর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেড। এইচআর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের টেক্সটাইল বিভাগ, প্রশাসন (আংশিক) এবং নিরাপত্তা বিভাগ এবং ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেডের প্রশাসন (আংশিক) এবং নিরাপত্তা বিভাগ বন্ধের আওতামুক্ত থাকবে। এ সময় কর্মীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন–২০০৬–এর ১৬ ধারা অনুযায়ী সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ব্যতীত অন্যান্য দিনের জন্য মূল মজুরির ৫০ শতাংশ এবং শতভাগ আবাসন ভাতা পাবেন।

প্রতিষ্ঠান দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কমপ্লায়েন্স) মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোভিডের পর থেকে কিছুটা সমস্যার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। পরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ সংকটকে আরও বেশি জটিল করে তোলে। তবে শ্রমিকদের মধ্যে এর প্রভাব আমরা পরতে দিইনি। ২০২৩ সালের শেষের দিকে ছয় মাস কাজ না থাকা সত্ত্বেও সবার বেতন পরিশোধ করা হয়। গত ঈদের আগে তিন মাস কাজ না থাকলেও প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মীদের সব বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধ করে ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়।’

মূলত জ্বালানিসংকট, কিছু আর্থিক জটিলতা এবং কার্যাদেশ সংকটের কারণে কারখানা দুটির আংশিক লে-অফ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আশা করছি চলতি মাসের শেষের দিকে সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

গত শুক্রবার উল্লিখিত কারখানা দুটির সামনে লে-অফ ঘোষণা করে মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কমপ্লায়েন্স) মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। নোটিশে বলা হয়েছে, আকস্মিক অর্থনৈতিক বিপত্তি, তীব্র কাঁচামালসংকট, জ্বালানিসংকট, কার্যাদেশের অভাবসহ মালিকের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত বহুবিধ কারণে ৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন–২০০৬–এর ১২ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এইচআর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের টেক্সটাইল বিভাগ, প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা শাখা এবং ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেডের প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা শাখা ব্যাতীত গার্মেন্টস বিভাগের সব শাখার কাজ বন্ধ থাকবে।

নোটিশে আরও বলা হয়, ৩ মে থেকে যথারীতি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চালু হবে। তবে সংকট অব্যাহত থাকলে এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন–২০০৬–এর শর্তসাপেক্ষে কারখানা বন্ধ ও লে-অফের সময়সীমা বৃদ্ধি হতে পারে। মার্চ মাসের অবশিষ্ট সমুদয় বেতন-ভাতা নির্ধারিত সময়েই পরিশোধ করা হবে এবং যাঁর যাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হবে। লে-অফ থাকাকালে কর্মীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন–২০০৬–এর ১৬ ধারা অনুযায়ী সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ব্যতীত অন্যান্য দিনের জন্য মূল মজুরির ৫০ শতাংশ এবং শতভাগ আবাসন ভাতা পাবেন বলেও নোটিশে জানানো হয়।