আগামী জুনে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ট্রেন চলাচল করবে: রেলমন্ত্রী

‘আখাউড়া-আগরতলা ও আখাউড়া-লাকসাম রেললাইন প্রকল্প’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শিবনগর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

আগামী বছরের জুনের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা ও আখাউড়া–লাকসাম ডুয়েল গেজ রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শিবনগর এলাকায় ‘আখাউড়া-আগরতলা ও আখাউড়া-লাকসাম রেললাইন প্রকল্প’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা, আখাউড়া-লাকসাম রেললাইন প্রকল্প পরিদর্শন করেছি। ইতিমধ্যে স্লিপার, রেললাইনসহ দরকারি সব সরঞ্জাম জোগাড় হয়ে গেছে। মাটির কাজের অগ্রগতি হয়েছে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। সবকিছু প্রস্তুত আছে। আশা করছি, আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ হবে। জুনের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা ও আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’

রেলমন্ত্রী বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে। দুই দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এটি। যেভাবে ভারত সরকার এটিকে গুরুত্ব দেয়, বাংলাদেশ সরকারও গুরুত্ব দেয়।

প্রকল্পে চার দফায় সময় বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন তো আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। আমাদের দেশে শুষ্ক মৌসুম। কাজের পুরো সময়। সেতু নির্মাণের কাজ সব শেষ হয়ে গেছে। অ্যাপ্রোচিংয়ের কাজ চলছে। শেষ হয়ে যাবে। আগামী জুনের মধ্যে আখাউড়া-লাকসাম রেললাইন উদ্বোধন করব। কাজের অগ্রগতিতে আমি সন্তুষ্ট।’

কসবার সালদা নদীতে রেলসেতু নির্মাণে বিএসএফের বাধার বিষয়ে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘সেতুর যে জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেই জায়গা ছাড়া বাকি দুই দিকে আমাদের অংশে রেললাইনের কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছি। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। যেকোনো সময় সমাধান হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, সারা দেশে ডাবল লাইন স্থাপন করা না হলে ব্রডগেজ চালানো সম্ভব না। আখাউড়া থেকে ঢাকা ও লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন এখনো মিটারগেজ। ধীরে ধীরে সব উন্নয়ন হবে। এখন দুই ধরনের রেলব্যবস্থা। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ। আমাদের পরিকল্পনা, ধীরে ধীরে সারা দেশে একধরনের রেলব্যবস্থা থাকবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। রেলের লোকোমাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সহকারী মাস্টারের নিয়োগের ফলাফল হয়ে গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে অনেকগুলো লেভেলক্রসিং অনুমোদিত এবং অনেকগুলো অননুমোদিত। অন্যান্য মন্ত্রণালয় যারা আমাদের রেলকে অতিক্রম করছে না, লেভেলক্রসিংয়ের বিষয়ে তাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। যার যে দায়িত্ব, তা পালন করতে হবে। লেভেলক্রসিং ব্যবস্থাপনায় শুধু রেল মন্ত্রণালয়ের একা দায়িত্ব না। সড়ক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সবাইকে দায়িত্ব দিতে হবে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে ৩৫০ জন সদস্য। বিএনপির সদস্য সাতজন। বিএনপি বিরোধী দলও না। তারা পদত্যাগ করলে সংসদের চলার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় না। বরং এর মাধ্যমে যদি তারা মনে করে জনমত তৈরি করবে, করুক। আগামী নির্বাচনে জনগণ তার মতামত দেবে।’

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আগে রেল যোগাযোগ ছিল না, সড়কপথে যোগাযোগ হতো। রেল যোগাযোগ চালু হলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে, উভয় দেশের নাগরিকেরা উপকৃত হবেন। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল চাহিদার ওপর নির্ভর করবে। বিষয়গুলো বিবেচনায় রয়েছে।’

আরও পড়ুন

এ সময় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে রেলের পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-লাকসাম প্রকল্পের পরিচালক শহিদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চলীয় রেলের প্রধান প্রকৌশলী জাফর আহমেদ, টেক্সমেকো ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর শরৎ শর্মা, আগরতলা-আখাউড়া রেললাইন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকসি, ইরকন ইন্টারন্যাশনাল টিম লিডার রামান শ্রিংলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন