নড়াইলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন, কুশপুত্তলিকা দাহ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। কালিয়া উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।
নারী কেলেঙ্কারি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে ওই মানববন্ধন করা হয়। এ সময় তাঁর একটি কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট কালিয়ায় যোগদান করেন।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে কালিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র আসলাম ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান, খান লুৎফর রহমান ও আবদুল মান্নান, বাবর আলী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন জনি প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর অপসারণের দাবি করেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফার্মেসির মালিকসহ ১৯ জন জেলা সিভিল সার্জনের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্যসচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শশাঙ্ক তাঁদের ও ওষুধ কোম্পানির কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেছেন, না দিলে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সরকারি চিকিৎসকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি সাড়ে ১৪ হাজার টাকার ওষুধের ভুয়া ভাউচার তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন।
কালিয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মো. মোতালেব হোসেন ৪ ফেব্রুয়ারি জেলা সিভিল সার্জনের কাছে আরেকটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ তাঁকে বাসায় ডেকে নিয়ে হুমকি দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া নারী সহকর্মীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ২৪ জানুয়ারি তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জেলা সিভিল সার্জন।
অভিযোগের বিষয়ে শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে কথা বলতে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালে তিনি ফোন দেন। অভিযোগের বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভুয়া, মিথ্যা ও বানোয়াট।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নড়াইলের সিভিল সার্জন সাজেদা বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মানববন্ধনের তথ্য পেয়েছেন। আগের অভিযোগগুলোর কাগজপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। নারী সহকর্মীকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় তিনি তাঁর মতো করে কারণ দর্শানোর জবাব দিয়েছেন। সব বিষয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ও খুলনা বিভাগীয় পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানে। সেখানকার নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।