পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থির করার চেষ্টা চলছে: মিয়া গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের জনগণ যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক সেই সময় একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থির করার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে দেশে অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা, সহনশীলতা ও ধৈর্যশীল ভূমিকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকেও দায়িত্বশীলভাবে রাজনৈতিক দল ও জনগণের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খর্ণিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বামুন্দিয়ায় অনুষ্ঠিত সহযোগী সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। সেখানে তিনি বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে গণভোটের পক্ষে মত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘দুই হাজার ছাত্র-জনতার জীবন ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ববরণের মধ্য দিয়ে পাওয়া এই নতুন বাংলাদেশকে তাঁদের চাওয়া অনুযায়ী গঠন করা এখন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা এখন সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেদিন ছাত্র-জনতা কর্তৃত্ববাদী শাসনকে লাল কার্ড দেখিয়েছে আর আমরা এখন দেশ নির্মাণের অন্তরায় দুর্নীতিকে লাল কার্ড দেখাব ইনশা আল্লাহ।’
ওয়ার্ড সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মোক্তার হোসেন, ঢাকার খুলনা ক্লাবের সভাপতি সরদার আ. ওয়াদুদ, সাবেক শিবির নেতা একরাম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইউনিয়ন আমির আবুল হোসেন শেখ, ইউনিয়ন সেক্রেটারি মুজিবুর রহমান, ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির সভাপতি নারায়ণ রাহা, সেক্রেটারি প্রদীপ দাস প্রমুখ।
বেলা তিনটার দিকে শোভনা ইউনিয়নের মান্দারতলায় অনুষ্ঠিত মতুয়া সম্মেলনেও প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। সেখানে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের ধর্মীয় উৎসব, আচার অনুষ্ঠান পালন করবে। কিন্তু পতিত হাসিনা সরকারের আমলে দেখা যেত, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে তাঁদের প্রতিমা ভেঙে তার দায় ইসলামপন্থীদের ওপর চাপিয়ে দিত। আর আপনারাও সহজে তা বিশ্বাস করে নিতেন ইসলামপন্থীদের সঙ্গে না চলাফেরার কারণে। তবে ৫ আগস্টের পর আপনারা প্রমাণ পেয়েছেন ইসলামপন্থীরা কখনো কোনো ধর্মের ওপর আঘাত বা তাঁদের মন্দিরে হামলা করেনি। বরং রাত জেগে আপনাদের পূজায় পাহারা দিয়েছে। তাই আসুন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের মানুষ একসঙ্গে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাঙ্ক্ষিত বসবাসের যোগ্য করে গড়ে তুলি।’