তিন দিন ধরে গুলি-মর্টার শেল এপারে আসছে না

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ধানখেতে পাওয়া ‘অবিস্ফোরিত’ মর্টার শেল। গত শুক্রবার তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত সড়কের পশ্চিমকুল এলাকায়ফাইল ছবি

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ চলছেই। কখনো থেমে থেমে, কখনো অনবরত গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কিছু জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাও আছে। তবে ওপারের গুলি-মর্টার শেল এখন আর এপারে আসছে না। এতে একধরনের স্বস্তি বিরাজ করছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গতকাল রাত থেকে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ওপারে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। এতে এপারের মানুষ স্বস্তি নিয়ে ঘুমাতে পেরেছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, গত শনিবারের পর নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, উখিয়ার পালংখালী ও টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের এপারে গুলি ও মর্টার শেল উড়ে আসেনি। তবে ওপারের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রচুর গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। কিছু এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে।

সরেজমিন তিন সীমান্ত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে , ঘুমধুমের তুমব্রু, নয়াপাড়া ও পালংখালীর রহমতের বিল ও হোয়াইক্যংয়ের উত্তরপাড়া, উনচিপ্রাং সীমান্তবর্তী ওপারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সীমান্তচৌকিগুলো বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি দখল করে নেওয়ার পর গোলাগুলি কমে গেছে। বিশেষ করে ওপারের নারাইংসন, মুরইংগাঝিরি ক্যাম্প, কাট্টবনিয়া ক্যাম্প, মাইকপোস্ট, তমরু রাইট ক্যাম্প, নাটালাপাড়া চৌকি, ঢেঁকিবনিয়া, চাকমাকাটা, নাকপুরা, কোয়াংচিমন, কুমিরখালী, শিলখালী, বলিরবাজার সীমান্তচৌকি দখল করে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি। আরকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে ঢুকে আশ্রয় নেয় বিজিপি, সেনাবাহিনী, শুল্ক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংস্থার ৩৩০ জন। এর পর থেকে এপারে গুলি আসা থেমে গেছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গত চার দিন এপারে কোনো গুলি এসে পড়েনি। কোনো ঘরবাড়ি কিংবা ফসলি খেতে গুলি, মর্টার শেল পাওয়া যায়নি।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, সর্বশেষ গত শনিবার ভোরে হোয়াইক্যং এলাকার মানুষের বাসাবাড়িতে গুলি এসে পড়েছিল। এরপর আর কোনো গুলি পাওয়া যায়নি। তবে ওপারের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে।

২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বিজিপির সীমান্তচৌকি দখলে আক্রমণ শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি। যা এখন দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে চলমান। মিয়ানমার অভ্যন্তরের সংঘর্ষের জেরে গুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপে এ পর্যন্ত এপারের দুজন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন।