নরসিংদী সরকারি কলেজে হোস্টেল ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নরসিংদী সরকারি কলেজের হোস্টেল ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় অধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী সরকারি কলেজে মাসিক হোস্টেল ভাড়া ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে হোস্টেলের শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর ১২টার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান।

কলেজ সূত্র বলছে, প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর এ কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সে পড়া ছাত্রদের জন্য দুটি ও ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হোস্টেল আছে। এর মধ্যে জিতেন্দ্র কিশোর মৌলিক ছাত্রাবাসে ৬৯, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ছাত্রাবাসে ৭২ ও ডা. জোহরা বেগম কাজী ছাত্রীনিবাসে ১১০ জন শিক্ষার্থী থাকেন। এ ছাড়া আরেকটি পাঁচতলা ছাত্রীনিবাসের নির্মাণকাজ প্রায় দুই বছর আগে শেষ হলেও প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় এখনো চালু করেনি কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এত দিন আবাসিক ছাত্ররা জনপ্রতি ৫০০ ও ছাত্রীরা ৬০০ টাকা মাসিক হোস্টেল ভাড়া দিতেন। গত রোববার তিন হোস্টেলের নোটিশ বোর্ডে নতুন নির্ধারিত মাসিক ভাড়ার তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তাতে দেখা যায়, ছাত্রদের হোস্টেল ফি ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৭৫০ ও ছাত্রীদের ৩৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই আজ আবাসিক শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, হোস্টেল তিনটির বিদ্যুৎ বিল কয়েক লাখ টাকা জমে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যবস্থাপনার ব্যয়ও বেড়েছে। এসব সমন্বয় করতে ১৮ জুলাই কলেজের হোস্টেল স্টিয়ারিং কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সদস্যদের সুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ বিল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাসিক ভাড়া বাড়ানো হয়। নোটিশে সেটি আগস্ট মাস থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই কোনো পূর্বাভাস ছাড়া হোস্টেল ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে হোস্টেল তিনটির শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ জানান। দুই ঘণ্টা বিক্ষোভের পর তাঁদের কয়েকজনকে কার্যালয়ে ডেকে নেন উপাধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দীন ভূঁইয়া। এ সময় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসেন। বিষয়টির দ্রুত সমাধান না হলে আরও বড় পরিসরে কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা তো নিয়মিত মাসিক ফি দিয়ে যাচ্ছি। তাহলে বিদ্যুৎ বিল জমে থাকবে কেন? কেন আমাদের বাথরুম ও ডাইনিং নোংরা থাকবে? কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় এখন আমাদের ওপর চাপাতে চাইছে। মাসিক ফি বাড়ানোর এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’

কলেজের হোস্টেল স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি ও উপাধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দীন ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মোশতাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, তিন হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি শুনে বিষয়টির সমাধান করা হবে।