সিলেটে দুই দিনে এক ট্রাক ও চার ট্রাক্টরভর্তি পাথর জব্দ

শাহ আরেফিন টিলা থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় চার ট্রাক্টরভর্তি পাথর জব্দ করে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জেছবি: প্রথম আলো

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পাথর লুট থামছে না। সম্প্রতি পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। মামলার পাশাপাশি লুট করা পাথর আটক করে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল পর্যটনকেন্দ্রে। অভিযানে নেমেছিল প্রশাসনের পাশাপাশি যৌথ বাহিনী। এরপরও পাথর লুটপাটকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র এলাকায় লুটপাট কমলেও লুট থামছে না ‘পাথরের খনি’খ্যাত শাহ আরেফিন টিলায়। এরই মধ্যে এই টিলার প্রায় ৮৫ শতাংশ পাথর লুট হয়ে গেছে। টিলা কেটে লুট করা হয়েছে পাথরগুলো। এরপরও থামছে না পাথর লুট।

শাহ আরেফিন টিলা থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় গতকাল বুধবার রাতে চার ট্রাক্টরভর্তি পাথর ও আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ট্রাকভর্তি পাথর জব্দ করেছে পুলিশ। তবে উদ্ধার করা পাথরের পরিমাণ জানা যায়নি।

এক ট্রাকভর্তি পাথর জব্দ করে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সরকারি খাস খতিয়ানে ১৩৭ দশমিক ৫০ একর জায়গায় শাহ আরেফিন টিলার অবস্থান। কথিত আছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর অন্যতম সফরসঙ্গী হজরত শাহ আরেফিন (রহ.) খাসিয়া পাহাড় এলাকা পরিভ্রমণকালে পাহাড়-টিলার চূড়ায় বিশ্রাম নিতেন। শাহ আরেফিনের একটি ‘আসন’ (বিশ্রামের স্থান) হিসেবে পরিচিতি থেকে ওই টিলার নামকরণ হয়েছে শাহ আরেফিন টিলা। লালচে, বাদামি ও আঠালো মাটির এ টিলার নিচে রয়েছে বড় বড় পাথর। এসব পাথর উত্তোলন করতেই চলছে ধ্বংসযজ্ঞ।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে চার ট্রাক্টরভর্তি পাথর নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সদস্যদের দেখে চালকেরা পাথর ও গাড়ি রেখে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ চার ট্রাক্টরভর্তি পাথরগুলো থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে এক ট্রাকভর্তি পাথর জব্দ করা হয়। সে সময় ট্রাকের চালক পালিয়ে যান। পরে পাথরসহ ট্রাক উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পুলিশের কাছে রাখা হয়।

এর আগে সাদাপাথরের পাথর লুটের ঘটনার পর থেকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। তল্লাশিচৌকিতে বালু ও পাথর পরিবহন করা যানবাহন আটকে বৈধ কাগজপত্র দেখা হচ্ছে। বৈধ কোনো কাগজপত্র পাওয়া না গেলে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ জানান, আটক করা পাথর ও যানবাহনগুলো পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। পাথরগুলো শাহ আরেফিন টিলা থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তল্লাশিচৌকিতে আটক করা ট্রাক ও পাথরের ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া আটক চারটি ট্রাক্টরের মালিক ও ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।