চান্দিনায় শ্বশুরবাড়িতে তরুণকে শিকলে বেঁধে হত্যার অভিযোগ

লাশ
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় আরমান হোসেন ওরফে জনি (২৬) নামের এক তরুণকে শ্বশুরবাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ করেছেন নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার কুটুম্বপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আরমান হোসেন পাশের দেবীদ্বার উপজেলার গাংচর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। পেশায় পিকআপ ভ্যানের চালক ছিলেন তিনি। আরমানের স্বজনদের অভিযোগ, তাঁকে হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

চান্দিনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কুটুম্বপুর গ্রামের এক কিশোর ওই পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে একটি লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসীকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের সময় নিহত তরুণের নাক, কান ও চোখে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায়। এ ঘটনায় নিহত তরুণের স্বজনেরা অভিযোগ দিতে থানায় এসেছেন বলে তিনি জানান।

নিহত আরমানের বাবা মজিবুর রহমান জানান, ছয় মাস আগে আরমানের সঙ্গে চান্দিনা উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে শিল্পী আক্তারের বিয়ে হয়। শিল্পী আক্তার আগে একবার বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁর আগের সংসারে একটি সন্তান আছে। আরমানকে বিয়ে করার পরও শিল্পী আগের স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

মজিবুর রহমান বলেন, দিন দশেক আগে শিল্পী তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত শনিবার তাঁর ছেলে শ্বশুরবাড়িতে যান। গতকাল রোববার তাঁদের (স্বামী-স্ত্রী) মধ্যে ঝগড়া হওয়ায় তাঁর ছেলের হাত-পা বেঁধে মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। রাত ১০টার দিকে ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ফোন করে কাবিনের টাকা ও অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। সকালে জানতে পারেন, ছেলের লাশ কুটুম্বপুর গ্রামের একটি পুকুরে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা আমার ছেলেকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দিয়েছে।’

নিহত আরমানের স্ত্রী শিল্পী আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আরমান মাদকাসক্ত ছিলেন। প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন। তাঁর বাবার বাড়িতে এসে তাঁকে মারধর করায় এলাকার লোকজন তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁর শ্বশুরকে ফোন দেন। রাত একটার দিকে তিনি (স্বামী) শিকল খুলে পালিয়ে যান। পরের দিন দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়ে জানতে পারেন, স্বামীর লাশ একটি পুকুরে পাওয়া গেছে।

চান্দিনা থানার ওসি মো. সাহাবুদ্দীন খান বলেন, লাশ উদ্ধারের পরপরই জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফয়েজ ইকবাল, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দলসহ চান্দিনা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।