নাটোরে আপিলের রায়ে ৬ ভোটে জয়ী হলেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী

মিজানুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে নাটোরের লালপুর উপজেলার ৫ নম্বর বিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের ফলাফল (গেজেট) বাতিল করা হয়েছে। নতুন ঘোষিত ফলাফলে মাত্র ছয় ভোট বেশি পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন মিজানুর রহমান। নাটোরের নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামসুল আল আমীন এই রায় ঘোষণা করেন। ১৩ মার্চ রায় ঘোষণার কথা থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে লিখিত আকারে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর ৫ নম্বর বিলমাড়িয়া ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিক আলীকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে সিদ্দিকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিজানুর রহমান ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিল চেয়ে নাটোরের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ৮ ও ৯ নম্বর ভোটকেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনা করে। এতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত সিদ্দিকের ভোটের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৪০। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিজানুর ৪ হাজার ৮৪৬টি ভোট পান। তবে ওই দিনই (২৮ আগস্ট ২০২২) সিদ্দিক সব কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনার জন্য আবেদন করেন। তবে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল সিদ্দিকের আবেদন খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে মিজানুরের মামলাও খারিজ হয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মিজানুর ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে (যুগ্ম জেলা জজ-১) আপিল করেন। পরে শুনানি শেষে ১৩ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। তবে ওই দিন রায় প্রকাশিত হয়নি। পরে গতকাল বিকেলে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল মামলার লিখিত রায় সরবরাহ করেন।

রায় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ঘোষিত রায় বাতিল করেছেন। একই সঙ্গে সিদ্দিক আলীকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা নির্বাচন কমিশনের আগের গেজেট বাতিল করেছেন। পাশাপাশি মিজানুর রহমানকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ঘোষণা করে নতুন গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা দিয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বিলমাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট গণনায় ত্রুটি ছিল। প্রার্থী মিজানুর রহমানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ ও ৯ নম্বর কেন্দ্রের ভোট গণনায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। পরে ভোট পুনর্গণনা করে দেখা যায়, পরাজিত প্রার্থী নির্বাচিত প্রার্থীর চেয়ে ছয় ভোট বেশি পেয়েছেন।

তবে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিদ্দিক আলী। তিনি প্রতিকারের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে মিজানুর রহমান বলেন, সত্যের জয় হয়েছে। আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। এর আগে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনে হারানো হয়েছিল।