খুদে শিক্ষার্থীরাই একদিন ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে

বিজ্ঞান উৎসবে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা। আজ সকালে রংপুর জিলা স্কুলে
ছবি: মঈনুল ইসলাম

শরীরের কোনো স্থানে আঘাত পেলে গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে বেশি ব্যথা অনুভব করি কেন? আলোর থেকে দ্রুতগতিসম্পন্ন কোনো বস্তু কি আছে? পৃথিবী কেন গোলাকার? আমরা গ্রীষ্মকালে খেজুরের রস পাই না কেন? খুদে শিক্ষার্থীদের এমন নানা প্রশ্নে মুখর ছিল রংপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণ। আজ শনিবার রংপুরে বিজ্ঞান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা’ শিরোনামে প্রথম আলোর বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী বিজ্ঞানচিন্তা ও মুঠোফোনভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ যৌথভাবে এই উৎসবের আয়োজন করছে। সহযোগিতায় ছিল রংপুর বন্ধুসভা।

সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও বিজ্ঞান উৎসবের পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রংপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমান ও বিজ্ঞান উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন বিকাশের ইভিপি ও হেড অব রেগুলেটরি করপোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। উৎসবের উদ্বোধন করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিকাশের কর্মকর্তা শাকিল মাহবুব, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিজন মোহন চাকী, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কামরুজ্জামান, অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাশার, প্রথম আলো রংপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফুল হক। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য মারুফ হোসেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, বিজ্ঞান মানুষকে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখায়। আজকের শিশুরাই আগামী দিনে একটি নতুন সমাজ বিনির্মাণ করবে। খুদে বিজ্ঞানীরাই দেশ-বিদেশে সুনাম বয়ে আনবে।

উৎসবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৮টি প্রজেক্ট প্রদর্শন করা হয়
ছবি: মঈনুল ইসলাম

বিকাশের ইভিপি হুমায়ুন কবির বলেন, বিকাশ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। শুধু বিজ্ঞান উৎসবে অংশ নেওয়া নয়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথভাবে বইপড়া কর্মসূচিও চলছে।

উদ্বোধনের পর রংপুর জিলা স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ২০ মিনিটের কুইজ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শাখায় ২টি ক্যাটাগরিতে ২৮১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। একই সঙ্গে মিলনায়তনের সামনে বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রদর্শনী চলে। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৮টি প্রজেক্ট প্রদর্শন করা হয়। কুইজ ও প্রজেক্ট মূল্যায়ন শেষে বেলা ১১টায় মিলনায়তনে নুপুর নৃত্য একাডেমির শিল্পীরা দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর জাদুশিল্পী রাজিব বসাক সবাইকে জাদু দেখান।

এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ সময় শিক্ষার্থীরা অতিথিদের কাছে বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে। প্রশ্নোত্তর পর্বটি বেশ জমে ওঠে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্নে অভিভূত হয়ে অভিভাবকেরা বলেন, খুদে শিক্ষার্থীরাই দেশের ভবিষ্যৎ। একদিন তারাই এই দেশকে সুন্দর করে সাজাবে। গড়ে তুলবে সত্যিকারের ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশ।

দুপুর সাড়ে ১২টায় পুরস্কার বিতরণের পর্ব হয়। এই পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন। প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বেশি করে বিজ্ঞানের সৃজনশীল চর্চা করতে হবে। কোনো চর্চাই বিফলে যায় না। তোমাদের ভাবতে হবে, এই সুন্দর দেশ তোমাদের চেষ্টায় আরও সুন্দর, আরও রঙিন, আরও সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠবে একদিন।’

প্রকল্প উপস্থাপনে সেরাদের সেরা হয়েছে দ্য মিলেনিয়াম স্টারস স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী আবিদ অর্ণব, নাফিস আল ফারুক ও অর্ঘ্য সরকার। কুইজ প্রতিযোগিতায় নিম্নমাধ্যমিক শাখায় সেরাদের সেরা রংপুর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম ফয়সাল ও মাধ্যমিক শাখায় পুলিশ লাইনস স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান।