‘মিথ্যা বিয়ের নাটক’ সাজিয়ে ছাত্রলীগ নেতার চার মাসের সংসার

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে চার মাস সংসার করার পর স্ত্রীকে আর স্বীকার করে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী তরুণী (২১) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন এবং যোগাযোগ করতে গেলে তাঁকে ভয় দেখাচ্ছেন।

ওই তরুণী রাজশাহী নগরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মমিনুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং সৈয়দ আমির আলী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বাড়ি নড়াইল জেলায়।

লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র মমিনুল ইসলাম একজন হুজুরকে ডেকে এনে মিথ্যা বিয়ের নাটক করে এবং স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আমার সঙ্গে বসবাস করে। গত চার মাস আমি তার সঙ্গে সংসার করেছি। কিন্তু কিছুদিন ধরে তার আচার-ব্যবহার খুবই খারাপ দেখি এবং আমার সাথে সে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এই সময় আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নাই। আমার বাবা পঙ্গু, তাঁর সাথে আমার যোগাযোগ নাই। আমার মা হার্ট অ্যাটাকের রোগী। আমার কোনো অভিভাবক নাই। সেই সুযোগে সে আমাকে রাজনৈতিক ভয় দেখায়।’

ওই ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মমিনের সঙ্গে আমার ছয় মাসের সম্পর্ক। গত চার মাস ধরে মমিন আমার সঙ্গে থেকেছে। আমরা কাজলায় একটা ভাড়া বাসায় থাকতাম। বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে আমরা ঘুরতেও গিয়েছি। কিন্তু এখন সে আমাকে অস্বীকার করছে। বিষয়টি নিয়ে আমি মতিহার থানায়ও কথা বলেছি।’ বিয়ের কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে বিয়ের কোনো প্রমাণ নেই। ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে আমি তখন বিয়েটা করেছিলাম। এখন সে অস্বীকার করায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আজ আত্মহত্যাও করতে গিয়েছিলাম। পরে চেয়ার পড়ার শব্দ শুনে বাসার লোকজন আমাকে উদ্ধার করে ৯৯৯ ফোন করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ছাত্রলীগ নেতা মমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, ‘একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ ঘটনায় সহকারী প্রক্টর সাইকা কবীরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি বাইরের কেস। তাই অভিযোগের সত্যতা মিললে সমাধানের জন্য থানায় পাঠানো হবে।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ‘মৌখিকভাবে ওই শিক্ষার্থী আমাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’