অস্ত্র পরীক্ষার সময় ‘ভুলবশত’ পুলিশের গুলি, দুই দোকানি গুলিবিদ্ধ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে একটি ব্যাংকের অস্ত্র পরীক্ষার সময় ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ দোকানি এয়াকুব আলীর পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আজ বিকেল চারটায় বুড়িশ্চর ইউনিয়নের তালুকদারপাড়ায়ছবি: এস এম ইউসুফ উদ্দিন

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে স্থানীয় দুই দোকানি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশের দাবি, একটি ব্যাংকের অস্ত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে ‘ভুলবশত’ দুজনের গায়ে গুলি লেগেছে। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত দুজন হলেন উপজেলার উত্তর বুড়িশ্চর তালুকদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আবসার (৪৩) ও এয়াকুব আলী (৫০)। মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরের টেণ্ডলের ঘাটাবাজারে দুজনের দোকান রয়েছে। নুরুল আবসার দোকানে মুরগি বিক্রি করেন। এয়াকুব আলীর দোকানটি কুলিং কর্নার। দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় নজুমিয়া হাটবাজারে একটি ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন প্রহরী একটি শটগান নিয়ে ফাঁড়িতে আসেন। ওই প্রহরীকে নিয়ে একজন কনস্টেবল গুলি ছুড়ে শটগানটি পরীক্ষা করছিলেন। আকাশের দিকে গুলি ছোড়া হলেও দুর্ঘটনাক্রমে দুই দোকানি গুলিবিদ্ধ হন।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই দোকানি তাঁদের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় পরপর কয়েকটি গুলির শব্দ শুনতে পান। একপর্যায়ে নুরুল আবসারের কনুইয়ের পাশে দুটি স্থানে গুলি লাগে। এয়াকুবও পায়ের দুটি স্থানে গুলিবিদ্ধ হন। দুজনের একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যজনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়।

গুলিবিদ্ধ নুরুল আবসারের স্ত্রী আফরোজা আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজন মানুষ দোকানে বসে ছিল, তাকে কেন গুলি করা হবে! এটি মেনে নেওয়া যায় না।’ এয়াকুব আলীর স্ত্রী শামিমা আকতার বলেন, ‘আমার স্বামী নিরীহ মানুষ। পুলিশের ভুলে তাঁকে গুলিবিদ্ধ হতে হলো।’

জানতে চাইলে হাটহাজারীর মদুনাঘাট তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন সুমন প্রথম আলোকে বলেন, একজন কনস্টেবল ব্যাংকের শটগানটি পরীক্ষার সময় ভুলবশত ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তিনি বলেন, এটি এবি ব্যাংক নজুমিয়াহাট শাখার অস্ত্র। ব্যাংকে একজন নিরাপত্তারক্ষীর মাধ্যমে তদন্তকেন্দ্রে পরীক্ষা করাতে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে এবি ব্যাংক নজুমিয়াহাট শাখার ব্যবস্থাপক সোহরাব খান তাঁর কার্যালয়ে বলেন, ‘আমাদের অস্ত্র আমাদের হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ এটি এবি ব্যাংকের অস্ত্র বলে থাকলে সেটা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার নেই।’

জানতে চাইলে হাটহাজারী পুলিশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোয়েব আহমেদ খান আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তিনি জানেন না। তাঁকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে তদন্ত করবেন।