ঘুষ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের পর বেতন না দেওয়ার মামলায় অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

২০ লাখ টাকা নিয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়ার পর এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) করে বেতনের ব্যবস্থা করে না দেওয়ার অভিযোগে নাটোরের মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অধ্যক্ষের নাম নয়ন চন্দ্র প্রামাণিক (৫২)।

নাটোর সদর থানা ও সদর আমলি আদালত সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল হক (৩৭) গত বৃহস্পতিবার সদর আমলি আদালতে প্রতারণা করে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের একটি মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি করা হয় নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিককে। তাঁর বাড়ি নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর গ্রামে। তবে তিনি নাটোর শহরের উত্তর বড়গাছা হাফরাস্তা মহল্লার একটি ভাড়াবাড়িতে বসবাস করেন।

মামলা থেকে জানা যায়, অধ্যক্ষ ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ে প্রভাষক পদে চাকরি দেওয়ার জন্য মোজাম্মেল হককে প্রস্তাব দেন। তিনি ২০১৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে শর্ত অনুযায়ী ১৩ লাখ টাকা দেন। অধ্যক্ষ একই বছর ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে ওই পদে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র দেন এবং যোগদান করান। সেই থেকে কলেজে নিয়মিত ক্লাস নিয়ে আসছেন মোজাম্মেল। কিন্তু এমপিও করে দিচ্ছিলেন না অধ্যক্ষ। এরপর আরও ৭ লাখ টাকা দিলে এমপিও হবে বলে অধ্যক্ষ আশ্বস্ত করেন। ফলে বাদী চলতি বছরের ৮ জুন সকালে অধ্যক্ষকে আরও ৭ লাখ টাকা দেন। কিন্তু এমপিও হয়নি। নানা অজুহাত দিয়ে যাচ্ছিলেন অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিক।

অবশেষে ২৫ অক্টোবর অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে আবারও এমপিওর ব্যবস্থা করতে বলেন মোজাম্মেল হক। অন্যথায় ২০ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করেন। অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র তাতে রাজি হননি। এরপর মোজাম্মেল বৃহস্পতিবার সদর আমলি আদালতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন।

আদালত বাদীর অভিযোগটি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা হিসেবে (এফআইআর) নেওয়ার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক সদর থানা মামলাটি এফআইআর হিসেবে নিয়ে আজ দুপুরে অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামাণিককে গ্রেপ্তার করে।

আজ বিকেলেই অধ্যক্ষকে সদর আমলি আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আজীম উদ্দিন জানান, তাঁরা আসামির জামিন চেয়েছেন। শিগগিরই জামিন শুনানির তারিখ হবে।