রংপুরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন
সংবাদ প্রকাশের জেরে রংপুরে যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক মাজহারুল মান্নানের (৪৫) বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে রংপুরের সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব রহমান। ফরহাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন লিয়াকত আলী, নজরুল ইসলাম, স্বপন চৌধুরী, অভিযুক্ত সাংবাদিক সরকার মাজহারুল মান্নান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় আঘাত ও হয়রানি ছাড়া কিছু নয়। সাংবাদিকেরা যেন সত্য প্রকাশ করতে না পারেন, এ জন্য এই কালো আইন করা হয়েছে। এই আইনের মিথ্যা প্যাঁচে ফেলে দেশব্যাপী সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই আইন বাতিল করতে হবে। সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মাজহারুল মান্নানসহ তিনজনের নামে হয়রানিমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গতকাল বুধবার সরকার মাজহারুল মান্নানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেন রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগরের তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম ওরফে শিপলু। আদালতের বিচারক আবদুল মজিদ অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—স্থানীয় বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ (৫৫) ও রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাফিউল ইসলাম শাফি (৫০)।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১ এপ্রিল রাত ৯টায় যমুনা টেলিভিশনের অপরাধ অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান ‘ক্রাইম সিনে’ কাউন্সিলর জাকারিয়া আলমকে ভূমিদস্যু আখ্যায়িত করে, সরকারি দলের নামে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি, সাধারণ মানুষকে হয়রানিসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আসামিরা যোগসাজশ করে কাউন্সিলর জাকারিয়ার মানহানি, সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছেন। একই সঙ্গে বর্তমান সরকার তথা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে দুর্বল ও জনবিচ্ছিন্ন করতে অপপ্রচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।