পৌর ভবনে নৌকার নির্বাচনী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ
মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম অভিযোগ করেছেন, প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর থেকে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপ কালকিনি পৌর ভবনকে নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে গত রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাহমিনা বেগমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সোহেল রানা।
কালকিনি, ডাসার ও সদর উপজেলার একাংশ নিয়ে মাদারীপুর-৩ আসন গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। তিনি ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। অপর দিকে তাহমিনা বেগম কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর থেকে মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতীকের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ তাঁর নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে কালকিনি পৌর ভবনটি দখল করে রেখেছেন। পৌর ভবনের মেয়রের কক্ষে নৌকার প্রার্থী প্রতিদিন কয়েক দফা সভা করেন। নৌকার প্রার্থী পৌর ভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাঁর কাজে ব্যবহার করছেন। এর ফলে পৌর ভবনে সেবা নিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীরা ঝামেলায় পড়ছেন।
অথচ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় (২০০৮) বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাঁর নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্য সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না। তা ছাড়া এসব কাজে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করা যাবে না।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, কালকিনি পৌর ভবনটি নৌকার প্রার্থী ব্যবহার করছেন, এমন একটি লিখিত অভিযোগ তাঁর কাছে এসেছে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে কালকিনি পৌরসভার মেয়র এস এম হানিফ বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর করা অভিযোগ ঠিক নয়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পৌর ভবনে আসতেই পারেন। কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচনের কাজে যুক্ত নন। তাঁদের এই অভিযোগও ভিত্তিহীন। নৌকার নির্বাচনী পরিচালনা এখান থেকে হচ্ছে না।
এ সম্পর্কে আবদুস সোবহানের মুখপাত্র ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান সরদার বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার পক্ষে কোনো কাজ করা হচ্ছে না। যাঁরা অভিযোগ দিচ্ছেন, তাঁরাই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালাচ্ছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম (ঈগল প্রতীক) বলেন, ‘কালকিনি পৌরসভার মেয়র নৌকার প্রার্থীর অনুসারী। তাই পৌর ভবনটি তিনি দখলে রেখে তাঁর নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। দুই বেলা পৌর ভবনে খাওয়াদাওয়া করা হচ্ছে। পৌর ভবনের সব কর্মচারীকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। বিষয়টি আমরা লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরেও কমিশন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।’