ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের উলিপুরের তবকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার উলিপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) চিরেন্দ্র নাথ রায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষে বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দল তবকপুর ইউনিয়নের রুহিয়ারপাড় এলাকায় যায়। তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিমের বাড়িতে গিয়ে তাঁর শিল্প সংযোগের মে মাসের বিল পরিশোধ রয়েছে কি না, তা জানতে চান। এ সময় রেজাউল বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি বিরক্ত হয়ে ঘুম থেকে উঠে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বিলটি পরিশোধ থাকলে তোদের সকলের খবর করে ছাড়ব।’
এরপর রেজাউল সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দলকে তাঁর রাইচ মিলের বিল পরিশোধের কপি দেখান এবং তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতা সঙ্গে কিছু লোক নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দলের সদস্যদের কাছে জানতে চান কে কে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল। এ কথা বলার পর লোহার রড দিয়ে ওই দলের ওপর অতর্কিত হামলা চালান তিনি।
রেজাউল ও তাঁর লোকেরা সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দলের সদস্যদের বেধড়ক মারপিট করে তাঁদের সঙ্গে থাকা হটস্টিক (জরুরি বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম) কেড়ে নেন। পরে তাঁরা (পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা) ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন।
হামলার শিকার আলহাজ উদ্দিন (৩০), রানু সরকার (২২), সদরুন্নবী (৩৫) ও আবদুর রাজ্জাক (৪৫) বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে তাঁরা চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরপর বিষয়টি উলিপুর জোনাল অফিসে কর্মকর্তাদের অবগত করেন।
রেজাউল করিম হটস্টিক কেড়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও তাঁদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিল পরিশোধ করেছি, তারপরও তাঁরা আমার লাইন কেটে দেওয়ার জন্য উদ্ধত হলে আমি তাঁদের নিবৃত্ত করি। এর বেশি কিছু ঘটেনি। তাঁরা বানিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর জোনাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সোহানুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী দলের ওপর হামলার ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে এজিএম চিরেন্দ্র নাথ রায় বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। এখন পর্যন্ত আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘তাঁরা অফিসের নিজস্ব প্যাডে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আজ শনিবার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উদ্ধার করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলে নেওয়া হবে।’