দিনাজপুরে শীত উপেক্ষা করে গণিত উৎসবে শিক্ষার্থীরা
দিনাজপুরে আজ শনিবার দিনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশাচ্ছন্ন চারদিক। তীব্র শীত ও হিমেল বাতাস উপেক্ষা করে আজ সকালে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে চলে এসেছে শিক্ষার্থীরা। সেখানে চলছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আয়োজিত ২০২৪-এর আঞ্চলিক গণিত উৎসব।
দিনব্যাপী গণিত উৎসবে নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ৯টায় দিনাজপুর বন্ধুসভার সদস্যদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জলিল আহমেদ। এ সময় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক দিনাজপুর শাখার উপব্যবস্থাপক মোস্তফা হেলাল, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ সাদেকুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষক জলিল আহমেদ বলেন, ‘আজকে তীব্র শীত উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসেছে গণিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, তা কিন্তু গণিতকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ, তারা এই খুদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতের প্রতি প্রেম সৃষ্টি করতে কাজ করে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক দিনাজপুর শাখার উপব্যবস্থাপক মোস্তফা হেলাল বলেন, ‘নিজেও গণিতের শিক্ষার্থী ছিলাম। গণিতের পোকা একবার যার মাথার মধ্যে ঢোকে, তার কখনো খারাপ চিন্তা করা সম্ভব হয় না। প্রাত্যহিক জীবনে গণিতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। গণিতের মেধা যার মধ্যে থাকে, সে সব সমস্যার সমাধান করতে কিংবা কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত অনায়াসেই নিতে সক্ষম হয়।’
প্রতিযোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তদের অভিভাবকেরা বেশ আগ্রহ নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসেছেন। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ দূরবর্তী এলাকা থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে গতকাল রাতেই অনেক অভিভাবক দিনাজপুর এসে পৌঁছান। কেউ এসেছেন ট্রেনে, কেউ মাইক্রোবাস ভাড়া করে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চগড় থেকে এসেছেন সামশুল হক। তিনি বললেন, শুক্রবার বিকেলেই ছেলেকে নিয়ে দিনাজপুরে এসেছেন। গণিত শেখার জন্য ছেলেকে স্পেশাল কোচিংও করিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও থেকে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে এসেছেন রহিমা আক্তার। সকাল সাতটায় দোলনচাঁপা ট্রেনে এসেছেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে প্রাইমারি ও জুনিয়র ক্যাটাগরিতে অংশ নিচ্ছে।
উৎসবের উদ্বোধনের পর এক ঘণ্টার পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০টায়। পরীক্ষা শেষে একদিকে তাদের পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলবে, অন্যদিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চলবে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব। শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে মঞ্চে থাকবেন গণিতবিদসহ পদার্থ, রসায়ন, কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষকেরা।
মাঠের এক কোনায় প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত গণিতসহ বিভিন্ন বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের স্টল আছে। সেখানে বিশেষ ছাড়ে বই কিনতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ভিড় করছেন। স্টলে আরও আছে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা।