মির্জাপুরে প্রতিবন্ধী নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর দায়িত্ব পেলেন দম্পতি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর জন্ম দেওয়া শিশুটিকে দত্তক নেওয়া দম্পতির কোলে তুলে দেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
ছবি : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর জন্ম দেওয়া সেই শিশুটিকে দত্তক হিসেবে পেয়েছেন লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতি। আজ রোববার বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসীম উদ্দিন হায়দার নিজ কার্যালয়ে ভূঞাপুর উপজেলার ওই দম্পতির কোলে শিশুটিকে তুলে দেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহ আলম ও মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন উপস্থিত ছিলেন।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুলাই সকাল ছয়টার দিকে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মজিরন বেগম রান্নার কাজে বের হয়েছিলেন। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কয়েকজন কর্মীর রান্নার কাজ করেন। তিনি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক (পুরোনো) সংলগ্ন মির্জাপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে রাস্তায় এক নারীকে প্রসব ব্যথায় ছটফট করতে দেখেন। তাঁর পাশে প্রাতর্ভ্রমণে বের হওয়া আরও দুই নারী দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে মজিরন এগিয়ে গিয়ে প্রতিবন্ধী ওই নারীর সন্তান প্রসব করান।

বিষয়টি জানতে পেরে মির্জাপুরের ইউএনও নবজাতক ও প্রসূতিকে চিকিৎসার জন্য কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

শিশুটিকে দত্তক দিতে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়। ২৮ জন দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নিতে আবেদন করেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ড যাচাই-বাছাই সভা করে। সভায় লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতিকে শিশুটি দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে ওই দম্পতির কাছে হস্তান্তর করেন।

আরও পড়ুন

লাল মাহামুদ বলেন, গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ওই শিশুর খবর পান তিনি। পরে তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটিকে তাঁরা পেয়েছেন। তাঁরা শিশুটিকে নিজের সন্তান হিসেবে বড় করে তুলবেন।

শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার খবর শুনে মজিরন বেগম বলেন, ‘খুবই ভালো অইছে। ওর একটা ঠাঁই অইলো।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম জানান, প্রতিবন্ধী ওই নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা গতকাল রোববার কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেছেন।

ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন জানান, দত্তক নেওয়া দম্পতি স্বেচ্ছায় শিশুটির জন্য নিরাপত্তা জামানত হিসেবে ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন