রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরণ অনশনে দুই শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দুই শিক্ষার্থী। আজ রোববার সকালেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন দুই শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার বেলা তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁরা অনশুর শুরু করেন। এর আগে তাঁরা দুই দিন ১২ ঘণ্টা প্রতীকী অনশনও করেন।

আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন নাট্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদেক রহমান ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল।

এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে গতকাল বিকেলে উপস্থিত হন নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক হাবিব জাকারিয়া ও সহযোগী অধ্যাপক কাজী সুষ্মিন আফসানা। এ ছাড়া পালাক্রমে অনেক শিক্ষার্থীও এসে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছেন। এ সময় তাঁরা ‘নাট্যকলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচি’, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই হবে একসাথে’, ‘জবাবদিহিতা নিশ্চিত কর!’, ‘সিন্ডিকেটের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

শিক্ষক হাবিব জাকারিয়া বলেন, ‘এ রকম অভিযোগ ওঠার পরও বিভাগের সভাপতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভায় বসেননি। আমি চব্বিশ–পরবর্তী প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’ কাজী সুষ্মিন আফসানা বলেন, ‘আমি নৈতিক দায়িত্ব থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে যে দাবি জানিয়েছে, সেটা যেন আরও জোরদার হয়, সে জন্যই এখানে এসেছি।’

সাদেক রহমান অভিযোগ তুলে বলেন, ‘ফরেনসিক রিপোর্টে শিক্ষক নিয়োগে কল রেকর্ড ফাঁসের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিভাগের সভাপতি মীর মেহবুবকে বারবার জবাবদিহির আওতায় আনতে চাইলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। আমার দাবি, ২৭ অক্টোবর সিন্ডিকেট সভায় যেন নিয়োগের বিষয়টি স্থগিত করা হয়। দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ ছাড়া অনশন ভাঙব না।’

আজ সকালে ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘আমরণ অনশনের ১৯ ঘণ্টা চলছে। এখনো অনশন ভাঙার আশানুরূপ কারণ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগ–বাণিজ্য সিন্ডিকেটকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। সাদেক রহমান ভাইয়ের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। আমারও শরীর যথেষ্ট দুর্বল। শিক্ষক নিয়োগ–বাণিজ্যের বিরুদ্ধে আমরা মৃত্যু অবধি লড়াই করব।’

নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মীর মেহবুব আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ যায়নি। বিতর্কিত বিষয়ে তদন্তবিহীন কোনো সিদ্ধান্ত প্রশাসন নেবে না।

এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্যসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছিলেন।