নোয়াখালীতে বিএনপির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা, আসামি আড়াই শতাধিক

নোয়াখালী জেলার মানচিত্র

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনার ১০ দিন পর দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের এক নেতা গতকাল শুক্রবার বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ওই মামলা করেন। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাশসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।

তবে এ মামলায় বিএনপির রাজনীতি করেন না, এমন লোকদেরও আসামি করার অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। মামলার বাদী ওই যুবলীগ নেতার নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।

থানা-পুলিশ জানায়, গত ৩১ আগস্ট বিকেলে উপজেলার একলাশপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। এ সময় বিএনপির মিছিলে বাধা দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের একদল কর্মী। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ধাওয়া করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১ সেপ্টেম্বর একটি মামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকাল যুবলীগ নেতা বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক বলেন, মামলায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরও ১৫০ থেকে ২০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মামলার এজাহারের ৪৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে নুর নবী চৌধুরীকে। তিনি বলেন, তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। কখনো বিএনপি করেননি। বিএনপির কোনো সভা-সমাবেশেও যাননি। বরং আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গেই তাঁর ওঠাবসা বেশি। একলাশপুর এলাকায় তাঁর একটি জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা তাঁকে ওই মামলায় জড়িয়েছেন। অথচ কয়েক মাস আগে একলাশপুরে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশের জন্য তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুন

নতুন করে আরেকটি মামলা করার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাশ। আজ শনিবার সকালে মুঠোফোনে তিনি বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। বিশেষ গোষ্ঠীর ইশারায় তাঁদের হয়রানি করার জন্য এ মামলা করা হয়েছে। মামলায় নুর নবী নামের একজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি একজন পেশাদার ঠিকাদার। কখনো বিএনপির রাজনীতি করেননি। এ ছাড়া আরেক আসামি মহিবউল্যাহ ঢাকায় থাকেন, কোনো রাজনীতি করেন না। আরেক আসামি হেলালও ঢাকায় থাকেন।

তবে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম প্রথমে দাবি করেন, তিনি সব আসামিকে চেনেন। পরে নাম ধরে কয়েকজনের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে নামগুলো দেওয়া হয়েছে। তারা বলতে পারবে। তবে বিএনপিকে যাঁরা অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন, তাঁদের আসামি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।