‘শামীম ওসমানরা প্রতিবারই পালিয়ে যায়, নব্য শামীম ওসমানরা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করে’
শামীম ওসমানদের (আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য) আমলে নারায়ণগঞ্জ ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। তিনি বলেছেন, ‘এই শামীম ওসমানরা প্রতিবারই ক্ষমতা পরিবর্তনের পরপরই পালিয়ে যায়। কিন্তু আবার নব্য শামীম ওসমানরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। তাই আমরা বলতে চাই, জুলাই–পরবর্তী এই বাংলাদেশে আর কোনো মাফিয়া বা নব্য শামীম ওসমানের যেন জন্ম না হয়।’
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর ৪ নম্বর সড়কে আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক এই মন্তব্য করেন। শুক্রবার বিকেলে এই সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ যুব অধিকার পরিষদ।
লড়াকু ছাত্র-জনতা আগামী দিনে এই দেশে কোনো ফ্যাসিবাদ তৈরি হতে দেবে না উল্লেখ করে সমাবেশে নুরুল হক বলেন, ‘আগামীতে যাঁরা নেতা হবেন, জনপ্রতিনিধি হবেন, ওই ভোটকেন্দ্র দখল করে সিল মেরে জনপ্রতিনিধি হবেন, সেই দুঃস্বপ্ন দেখবেন না। জনগণ যাকে সমর্থন করবে, জনগণ যাদের পেছনে থাকবে, তারাই নেতা হবে, দেশ শাসন করবে।’
যুব অধিকার পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি শেখ সাব্বির রাজের সভাপতিত্বে যুব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, সহসভাপতি ওয়াহিদুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি নাহিদসহ জেলা ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক আরও বলেন, ‘কোনো কোনো দল যদি ভাবে আমরা একাই এক শ, আমরাই সব নিয়ন্ত্রণ করব, আমরাই হর্তাকর্তা, তাদের বলব, আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নিন। এই দেশের মানুষ কাউকে পরোয়া করেননি, ১৬ বছরের দৈত্য দানবীয় হাসিনার ফ্যাসিবাদ হটাতে বুক পেতে দিয়েছিল। সেই বীর লড়াকু ছাত্র-জনতা-আগামীতে এই দেশে কোনো ফ্যাসিবাদ তৈরি হতে দেবে না।’
দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণকে সচেতন করা, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং পরিবর্তনের জন্য গণ অধিকর পরিষদের বার্তাকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া।’ গণ অধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে উল্লেখ করে তিনি মানুষের বিকল্প আশাআকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিটি আসনে নেতা–কর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে আজকের এই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন হতো না। ২৪ সালের গণ-অভুত্থ্যান এই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই। কিন্তু আমাদের ভাইয়েরা নতুন বন্দোবস্তকারীরা আজকে সেটি অস্বীকার করে।’
এদিকে অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে নেতা–কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।