কুষ্টিয়ায় বিয়ের তিন দিন আগে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে গেছেন ছাত্রলীগ নেতা

অপহরণ
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে এক কলেজছাত্রীকে (১৭) অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীর ভাই বাদী হয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আদিপুজ্জামান সংগ্রাম। সংগ্রামের বাবাসহ আরও দুজনের নাম উল্লেখ করে অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে বাদী বলেন, গতকাল বেলা দেড়টায় সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর বাজার থেকে কেনাকাটা শেষে তাঁর বোন বাড়ি ফিরছিল। বেড়বাড়াদি এলামপাড়া থেকে তাকে জোর করে ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যান সংগ্রাম। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই কলেজছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন ছাত্রলীগ নেতা সংগ্রাম। গতকালও পথ রোধ করে আবার প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সংগ্রাম ও তাঁর সহযোগীরা কলেজছাত্রীকে জোর করে ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যান।

দীর্ঘদিন ধরে ওই কলেজছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন ছাত্রলীগ নেতা সংগ্রাম।

কলেজছাত্রীর ভাই প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বোন স্থানীয় একটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে। তাকে মাঝেমধ্যেই বিরক্ত করত আদিপুজ্জামান সংগ্রাম। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার বোনকে তুলে নিয়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বোনের কোনো খোঁজ পাইনি।’ বাদী বলেন, ‘ওই (আদিপুজ্জামান সংগ্রাম) ছেলের সঙ্গে আমার বোনের প্রেমের কোনো সম্পর্ক ছিল না। আগামী বুধবার আমার বোনের বিয়ে। সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।’

বাদী আরও বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। মামলা হয়েছে কি না, পুলিশ জানায়নি। রোববার রাত ১২টার দিকে বোনের মোবাইলে কল দিলে সংগ্রাম রিসিভ করে। আমার কণ্ঠ শোনার পর লাইন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখে। আর কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির আদিপুজ্জামান সংগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, এ রকম ঘটনা হলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে।

এ ব্যাপারে জানতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমানকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ থানায় জমা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বাবার নামও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ আছে। তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। ওই মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।